কলকাতা: প্রাথমিকে (Primary Section) ৫০ শতাংশ হাজিরা নিয়ে স্কুল চালুর (West Bengal School Reopen) বিষয় ভাবনায় আছে। জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, “স্কুলগুলি চালু হয়েছে। পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণি পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয় (Paray Sikkhalay) চলছে। একেবারে ছোটদের ক্ষেত্রে আর কিছু দিন অপেক্ষা করে কোভিড(Covid19) যদি সমস্যার না হয় তাহলে ৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে ক্লাস করা যায় কি না সেটা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। ভাগাভাগি করে ক্লাস করা যায়। সোমবার যারা এল, তারা মঙ্গলবার এল না। তাহলে অন্তত প্রাথমিক স্তরের ক্লাসও হবে।‘’


করোনা কাঁটায় ২ বছর ধরে স্কুল বন্ধ। চূড়ান্ত এক অনিশ্চয়তা। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা নেই। একঘেঁয়ে অনলাইন ক্লাস। আর কতদিন? বারবার এই প্রশ্নই তুলছে পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা। ইতিমধ্যেই সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শুরু হয়েছে পাড়ায় শিক্ষালয়। এক সপ্তাহ আগে অষ্টম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের স্কুলে (School) ক্লাস শুরু হয়েছে রাজ্যে (West Bengal)। তবে এখনও খোলেনি প্রাথমিক স্তরের স্কুল। এবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কবে চালু হবে কচিকাঁচাদের স্কুল? এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন কোভিড পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ৫০ শতাংশ হাজিরা নিয়ে ছোটদের স্কুল চালুর ভাবনায় আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 


ইতিমধ্যেই ছোটদের স্কুল খোলার পক্ষে মত জানিয়েছেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিত্‍ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় (Novel laureate Abhijit Binayak Banerjee)। যিনি রাজ্যের করোনা সংক্রান্ত গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বোর্ডের প্রধান।নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিত্‍ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজ্য সরকারকে বলেছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুল খুলে দেওয়া, এটাই আমাদের মত। এখনই স্কুল খোলা দরকার। এই কোভিডের সংখ্যা কম। আমার ধারণা, সরকার শীঘ্র স্কুল খুলে দেবে, যতদূর জানি। কারণ, সবাই চান স্কুল খোলা হোক। বুধবার ‘লিভার ফাউন্ডেশন’ এবং ‘প্রথম’-এর উদ্যোগে করোনাকালে রাজ্যে স্কুলশিক্ষার সংক্রান্ত একটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। Annual Status of Education Report বা ASER (আসার)-এর সমীক্ষায়, এই দুঃসময়ে রাজ্য রাজ্যের সরকারি স্কুলের ভর্তির হার বাড়লেও শিশু পড়ুয়াদের পারফর্ম্যান্সে উদ্বেগের ছবি স্পষ্ট। 


সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে ১২.৬ শতাংশ শিশু বর্ণ পড়তেও অক্ষম। ২০.৭ শতাংশ শিশু বর্ণ পড়তে পারলেও শব্দ বা তার বেশি পড়তে পারে না। ১৭.৫ শতাংশ শিশু পড়তে পারে, কিন্তু প্রথম শ্রেণি বা উচ্চতর স্তরের পাঠ পড়তে অক্ষম। তৃতীয় শ্রেণির শিশুদের মধ্যে ৯.২ শতাংশ ১ থেকে ৯ সংখ্যা চেনে না। ৩২.৭ শতাংশ শিশু ৯৯ পর্যন্ত সংখ্যা চিনতে পারে কিন্তু বিয়োগ করতে পারে না। ১৫.৫ শতাংশ শিশু বিয়োগ করতে পারে কিন্তু ভাগ করতে পারে না। রাজ্যের সরকারি স্কুলের ৭০ শতাংশ শিশু পড়ুয়া এখনও গৃহ শিক্ষক নির্ভর। বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে তা ৭৩ শতাংশ। সরকারি স্কুলে পড়া ৬৬.৪ শতাংশ শিশু বাড়িতে পড়ার সময় পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে সাহায্য পায়। সমীক্ষক সংস্থার তরফে দার্জিলিং বাদে রাজ্যের ১৭টি জেলার ৫১০টি গ্রামে ১০ হাজার ১৪১টি পরিবারে সমীক্ষা চালানো হয়। ৩ থেকে ৬ বছররের ১১হাজার ১৮৯ জন শিশু পড়ুয়ার মধ্যে এই সমীক্ষা হয় ডিসেম্বর মাসে। করোনাকালে দীর্ঘ ২ বছর স্কুল বন্ধ থাকায় শৈশবের ক্ষতি বেড়েছে, এবং সেখান থেকেই উঠে এসেছে স্কুল খোলার দাবি।


আরও পড়ুন: Covid19: করোনা আবহে বাড়ছে হৃদরোগের আশঙ্কা! গবেষণা রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য