কলকাতা: ভোর রাতে বাড়িতে ঢুকে জিজ্ঞাসাবাদ। সকালে গ্রেফতার। তার সাড়ে আট ঘণ্টার মধ্যে জামিনও পেয়ে গেলেন কৌস্তভ বাগচি (Koustav Bagchi)। আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতাকে নিয়ে শনিবার রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়।


ছেলের পাশে দাঁড়িয়েছেন কৌস্তভের বাবা-মা। কৌস্তভের মা বলেছেন, 'ছেলেকে নিয়ে আমি গর্বিত। ওর জয় হবেই।'


কৌস্তভের বাবা কুশল বাগচি এবিপি আনন্দকে বলেছেন, 'রাত তিনটে নাগাদ কলিং বেজ বাজায়। আমি উঠে যাই। কৌস্তভও যায়। ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে। আমি জিজ্ঞেস করি কী ব্যাপার, আপনারা কোথা থেকে আসছেন? আমাকে বলা হয় বড়তলা থানা থেকে আসছি, ওকে বার করে দিন। এখনই নিয়ে যাব। কৌস্তভ বলে নিয়ে তো যাবেন কিন্তু ৪১ বা ৪১ এ কোনও নোটিশ আছে আপনাদের কাছে? তখন বলে না আপনি আসুন না। কৌস্তভ বলে আপনারা চলে যান, আমি নিজে থেকেই চলে যাব। সকাল হতে দিন, চলে যাব। কিন্তু পুলিশ কোনও কথা শোনেনি। ওকে নানারকম হেনস্থামূলক কথাবার্তা বলে। যখন নিয়ে যায়, তখন ঘড়ির কাঁটায় ৮টা বেজে গিয়েছে।  প্রয়োজনীয় নথি সঙ্গে আনেনি। ও যখন চাইছিল, তখন সঙ্গে ছিল না। পরে সেই কাগজ এনে কৌস্তভকে গ্রেফতার করে পুলিশ।'


সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের জয়ের পর অধীর চৌধুরীকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর। তার জেরে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও অবসরপ্রাপ্ত IAS অফিসার দীপক ঘোষের লেখা বই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলনেত্রীকে পাল্টা আক্রমণের পরেই, আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতার করল বড়তলা থানার পুলিশ। জামিন অযোগ্য ধারায় কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হবে কৌস্তভকে। 


কৌস্তভের দাবি, গতকাল রাত আড়াইটে নাগাদ পুলিশ তাঁর ব্যারাকপুরের বাড়িতে যায়। সকালে পুলিশের আরও একটি দল পৌঁছয় কৌস্তভের বাড়িতে। গ্রেফতারের আগে ধারা দেওয়া নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তুমুল কথা কাটাকাটি হয় আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীর। কৌস্তভকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় স্লোগান দিতে শুরু করেন কংগ্রেস কর্মীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন, এভাবে ভয় দেখিয়ে কণ্ঠরোধ করা যাবে না, গ্রেফতারির পর প্রতিক্রিয়া কৌস্তভ বাগচীর।


এদিন আদালতে তোলা হয় কৌস্তভকে। শুনানিতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এদিন তিনি বলেন, ‘মাঝরাতে আইনজীবীকে তুলে আনার অধিকার পুলিশকে কে দিয়েছে?'কৌস্তভ কি কোনও সন্ত্রাসমূলক কাজে যুক্ত? কোর্টে প্রশ্ন বিকাশ ভট্টাচার্যের। 'কৌস্তভ বলেছেন, একটি বই বাজারে আছে। যে বইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে বলা আছে। সেই বই এখনও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সরকার তো ব্যান করেনি। কেন ৪১ ধারায় নোটিস করল না পুলিশ? কেন মাঝরাতে পুলিশ বাড়িতে ঢুকল? এরপর তো কোনও বিচারকের বাড়িতেও পুলিশ ঢুকে যাবে। কোথায় যাচ্ছে আইন ব্যবস্থা? রাত ৩টেয় বাড়িতে পুলিশ চলে এল। এত রাতে কারও বাড়িতে পুলিশ যাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে।'আদালতে সওয়াল আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর। 'পুলিশ ১০ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতে চেয়েছে মোটিভ খুঁজে বের করার জন্য? ওসি, আইও-কে শোকজ করা হোক।‘ যে কোনও শর্তে কৌস্তভকে জামিনের আর্জি। গ্রেফতারির সাড়ে ৮ঘণ্টার মধ্যেই কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী জামিন পান। 


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ১০০ দিনের কাজে জবকার্ড দুর্নীতির অভিযোগ,কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে চিঠি শুভেন্দুর