গৌতম মণ্ডল, কলকাতা : ভাদ্র মাসের সংক্রান্তি মানেই বাংলার ঘরে ঘরে অরন্ধন ব্রত পালন। পশ্চিমবঙ্গীয় পরিবারগুলিতে ধুমধাম করে পালন হয় রান্না পুজো। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তির দিন এই ব্রতপালন হয়।  আর এই দিনে বাঙালির পাতে ইলিশ থাকতেই হবে। তাই এ সময় বাজারে ইলিশের জোগান বাড়ে। আর ইলিশ না পেলেই মুখ বেজার হয়ে যায় ভোজন রসিক বাঙালির। এবার কি বাজারে ইলিশের জোগানে ঘাটতি পড়বে ?  আবহাওয়ার চোখ রাঙানিতে এমনটা ঘটতেই পারে। 


প্রতিবছর এই সময়টায় জাল ভরে রুপোলি শস্য তুলে ডাঙায় ফেরেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু  গত তিন দিন ধরে নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনাজুড়ে চলছে দফায় দফায় বৃষ্টি । আর ১ সপ্তাহের মধ্যেই অরন্ধন উৎসব। অথচ ট্রলার বা মাছ-ধরার নৌকো নিয়ে বেরোতেই পারছেন না মৎ্স্যজীবীরা। জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টির প্রাবল্যের সঙ্গে সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। সমুদ্রও উত্তাল। 


বুধবারও ভোর থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবার জুড়ে বৃষ্টি চলছে। আকাশ মেঘে ঢাকা।  দিনভর এই দুর্যোগ চলবে বলে জানিয়েছে হাওয়া-অফিস।  পূর্বাভাস বলছে, নিম্নচাপের জেরে বঙ্গোপসাগরে ঘন্টায় ৪৫ থেকে ৫০কিমি বেগে ঝোড়ো বাতাস বইবে।  ফলে সমুদ্র উত্তালই থাকবে। তাই এখনও পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞাই জারি রয়েছে। 


টানা তিন দিন সমুদ্রে রওনা দেয়নি মৎস্যজীবী ট্রলারগুলি। ফলে ইলিশের ভরা মরসুমে লোকসানের মুখে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। সামনে অরন্ধন ও বিশ্বকর্মা পুজো। এইসময় ইলিশের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জোগান না থাকায় ইলিশের দাম বেশ চড়া। এর মধ্যে না বেরোতে পারলে ইলিশের ঘাটতি তো হবেই, চড়বে দামও। 


আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুসারে, বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে  উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা  এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতে। বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের বাকি সব জেলাতে।  বৃহস্পতিবারও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলাতে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে প্রায় সব জেলাতে।  শুক্রবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদ জেলাতে।


আরও পড়ুন : স্বাস্থ্যভবন অভিযানের আগে জুনিয়র ডাক্তারদের ৫ দফা দাবির সঙ্গে জুড়ে গেল আরেকটি মোক্ষম দাবি, মানবে রাজ্য?