গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভয়াবহ ভয়াবহ ভাঙনের মুখে রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গঙ্গাসাগরের কপিলমুনির আশ্রম (kapilmuni ashram)। জটিল আবহাওয়া ও সমুদ্রপাড় ভাঙনের কারণে প্রাচীন এই তীর্থক্ষেত্রের স্থায়িত্ব নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয় (South 24 Parganas)। 


১-৫ নম্বর পর্যন্ত গঙ্গাসাগরের স্নানঘাটের রাস্তা গতকাল জলোচ্ছ্বাসে (High Tide in Gangasagar) তলিয়ে গিয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের তরফে সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে মাইকে সতর্কতামূলক প্রচার চলছে। নিম্নচাপ ও কটালের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গিয়েছে গাছ, উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। সমুদ্র পাড়ের অসংখ্য অস্থায়ী দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আতঙ্কিত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গঙ্গাসাগরের পরিস্থিতি ক্রমশই জটিল হয়ে চলেছে। সাগর পাড়ে যে দোকানগুলি রয়েছে, সব বন্ধ। বেশ কিছু দোকান তুলে নেওয়া হয়েছে। দোকান সরিয়ে নেওয়ার আবেদন করছে প্রশাসন। সাগরপাড়ে যাঁদের দোকান রয়েছে, সেই দোকানোর কাঠামো ও মালপত্র সরিয়ে ফেলার আবেদন করছে প্রশাসন। সাগর ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে টানা মাইক-প্রচার করা হচ্ছে।  বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী নেমেছে রাস্তায়।  কোনও পুণ্যার্থী যেন স্নানের জন্য  সাগরে না নামেন, সেই প্রচার করা হচ্ছে। ওই এলাকার সাগর টানা ফুঁসে চলেছে। ঢেউ আছড়ে পড়ছে পারে। সমুদ্রের তাণ্ডবের জন্য পাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাগরের বিডিও কানাইকুমার রায় বলেন,'কটালের সময় ধস হয়েছে। প্রতিবছরই হয়, এবার একটু বেশি হয়েছে। পুণ্যার্থীদের অন্যদিকে সরানো হয়েছে।'


গত ২দিনে জলোচ্ছ্বাস ও ধসের জেরে কার্যত তছনছ গঙ্গাসাগর। গাছ, দোকানপাট, কংক্রিটের স্নানঘাট সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। অতীতে তিনটি মন্দির তলিয়ে গিয়েছে এই সমুদ্রগর্ভে। প্রকৃতির তাণ্ডবের সামনে কি এবার কপিলমুনির আশ্রমও তলিয়ে যাবে সমুদ্রগর্ভে? বাড়ছে আশঙ্কা।


ট্রলারডুবি:
কটাল ও নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র। সাগরে ঢেউয়ের ধাক্কায় উল্টে গেল ৩টি ট্রলার। ২ মৎস্যজীবী গুরুতর আহত হন।উদ্ধার করা হয়েছে ৩টি ট্রলারের বাকি ২৯ জন মৎস্যজীবীকে। আবহাওয়া নিয়ে আগেই সতর্কতা জারি করেছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু ইলিশ ধরার মরশুমে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই গতকাল কাকদ্বীপ ও সাগর থেকে মাছ ধরতে রওনা দেয় ৩টি ট্রলার। জম্বুদ্বীপের কাছে FB মল্লেশ্বর এবং সাগরের বেগুয়াখালিতে আরও দুটি ট্রলার তলিয়ে যায়। ডুবে যাওয়া ট্রলারের খোঁজে চলছে তল্লাশি। নজরদারি এড়িয়ে কীভাবে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে পাড়ি দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। 


বৃষ্টির পূর্বাভাস:
গোটা সপ্তাহজুড়েই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আজ থেকে রবিবার পর্যন্ত দক্ষিণের সমস্ত জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে। সপ্তাহের প্রথম দিনই ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, এই ৫ জেলায়। আগামীকালও ভারী বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণের চার জেলায়। সমুদ্র উত্তাল থাকায় মঙ্গলবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গেও রবিবার পর্যন্ত একইরকম বৃষ্টি হবে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে উত্তরের ৭ জেলায়। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: শ্রাবণ সোমবারে এই কাজটি করলেই মিলবে ভোলেনাথের অফুরন্ত আশীর্বাদ, আসবে ঢালাও অর্থ