মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর (পশ্চিম বর্ধমান) : পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে দু’টি কমিটির নামে বিভিন্ন দামের কুপন ছাপিয়ে চলছে টাকা সংগ্রহ। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের মদতেই বাস, ট্যাক্সি, অটো ও টোটো থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে একযোগে আক্রমণ করেছে বাম ও বিজেপি। যদিও তোলাবাজির অভিযোগ মানতে চাননি কাউন্সিলর।


দু’টি সংগঠনের নামে ছাপানো হয়েছে তিন ধরনের কুপন। রং বদলের সঙ্গে কুপনের মূল্যও আলাদা। কোনও কুপন চার টাকার, কোনওটা পাঁচ টাকার তো কোনওটা আবার ছ’টাকার। দুর্গাপুর স্টেশন বাস স্ট্যান্ডে এই তিন ধরনের কুপনের মাধ্যমেই চলছে টাকা আদায়।


বাস স্ট্যান্ড পরিচালন সহায়ক কমিটি ও দুর্গাপুর সাব ডিভিশন বাস ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের নামে বাস-মিনিবাস-ট্যাক্সি-অটো-টোটো থেকে প্রতিদিন চলছে টাকা সংগ্রহ। 


দ্বিতীয় সংগঠনটি আবার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC অনুমোদিত। সুরেন গুপ্ত নামে এক বাসকর্মী বলেন, এরা প্রতিদিন টাকা নেয়।


কিন্তু একই জায়গায় কেন বিভিন্ন কুপন ছাপিয়ে টাকা আদায় চলছে? তার ব্যাখ্যাও রয়েছে সংগঠনের কাছে। তাদের দাবি, একটি ক্ষেত্রে টাকা নেওয়া হয় সংগঠনের সদস্য হিসেবে। অন্য ক্ষেত্রে সংগৃহীত টাকা স্ট্যান্ড পরিষ্কারের কাজে লাগানো হয়।


বাস স্ট্যান্ড পরিচালন সহায়ক কমিটির সদস্য দীপক রজক বলেন, বাস স্ট্যান্ড পরিষ্কার করার জন্য নিচ্ছি, স্থানীয় কাউন্সিলর শিপুল সাহার তত্ত্বাবধানে আমরা নিচ্ছি।


আর এখানেই উঠছে তোলাবাজির অভিযোগ উঠে আসছে দুর্গাপুর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর শিপুল সাহার নাম।


বিজেপি ও বামেদের অভিযোগ, নানা অছিলায় টাকা সংগ্রহের নামে তোলাবাজি চলছে। যাতে মদত দিচ্ছেন কাউন্সিলর।


দুর্গাপুরের বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কুপন ছাপিয়ে প্রতিদিন টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে, তোলাবাজি চলছে, কাউন্সিলরের মদতে হচ্ছে।


পশ্চিম বর্ধমান সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, তোলাবাজি চলছে। যদি তৃণমূলের সংগঠনের মদত না থাকে তাহলে থানায় জানাক। সেটা তো হচ্ছে না, এত টাকা যাচ্ছে কোথায়?


যদিও কুপন থেকে টাকা আদায়ে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। দুর্গাপুর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর শিপুল সাহা বলেন, বাস স্ট্যান্ড পরিষ্কার করে, এখান থেকেই ওদের মাইনে দেওয়া হয়। বর্তমান পুরবোর্ড বাস স্ট্যান্ড পরিষ্কার করে না, তাই কমিটি করে পরিষ্কার করা হয়। তোলাবাজির অভিযোগ আমাকে হেয় করতে।


পশ্চিম বর্ধমানের আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন, টাকা নেওয়া হচ্ছিল। পুলিশকে বলেছি নেওয়া যাবে না। আর টাকা নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের সংগঠনের ব্যানারে টাকা নেওয়া হচ্ছিল না।


সব মিলিয়ে কুপন কেটে টাকা সংগ্রহ নিয়ে সরগরম শিল্পশহর।