কৌশিক গাঁতাইত, আসানসোল (পশ্চিম বর্ধমান):  আসানসোল (West Burdwan Asansol) পুরসভার (Municipal Election)  ৩৪  নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম (CPM) প্রার্থী সঞ্জয় পরামানিককে মারধর এবং ভোটে সন্ত্রাস ও বুথ লুঠের প্রতিবাদে রানিগঞ্জে (Ranjganj) ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ (Road Blocked) করে বিক্ষোভ  সিপিএমের । রানিগঞ্জ মারোয়াড়ি হাসপাতালের সামনে কুড়ি মিনিটের এই অবরোধে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় ।  সিপিএমের রানিগঞ্জ এরিয়া কমিটির সদস্য সুপ্রিয় রায় বলেন, পুরভোটে অবাধে ভোট লুঠ হয়েছে । সঞ্জয় পরামানিককে খুন করার উদ্দেশ্যে মারধর করা হয়েছে । তারই প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ । এদিকে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রঞ্জিত সিং এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।  তাঁর দাবি,  কোনও সন্ত্রাস হয়নি। মানুষ এবার নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছে ।   


গতকাল পুরভোটে বিভিন্ন জায়গায়তেই অশান্তির ছবি ধরা পড়ে।  আসানসোল পুরসভার ভোটে গুলি চালানোর অভিযোগও ওঠে। পড়ে বোমাও। সিপিএমের অভিযোগ, জামুড়িয়ায়, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বুথ দখলের চেষ্টায় গুলি চালিয়েছে তৃণমূল। অভিযোগ অস্বীকার করে শাসকদল। ধাদকাতেও গুলি চালানোর অভিযোগ ঘিরে তুঙ্গে ওঠে বিজেপি ও তৃণমূল তরজা। কুলটিতে বুথের কাছেই বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছিল।  পুরভোটে আসানসোলের জামুড়িয়ায় গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছিল। জামুড়িয়ার সিপিএম প্রার্থীর মেয়ের ফেসবুক প্রোফাইলে ঘটনার লাইভ করা হয়।ব্যালটের উৎসবে বুলেটের খোল উদ্ধার হয় ধাদকায়।
কুলটিতে বোমাবাজির ঘটনাও ঘটে। ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি হয়। পাল্টা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের তাড়া করে। শনিবার দুপুরে, আসানসোলের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে, জামুড়িয়ার শ্রীপুর বয়েজ হাইস্কুলের বুথের সামনে গুলি চলে বলে অভিযোগ।ফেসবুক লাইভ করে গুলি চালানোর অভিযোগ তোলেন সিপিএম প্রার্থী দয়াময় বাউড়ির মেয়ে লিপি দাস।
সিপিএমের অভিযোগ, এদিন সকালে জামুড়িয়ার ওই বুথ দখলের চেষ্টা করে তৃণমূল। গ্রামবাসী-দের প্রতিরোধের মুখে প্রথমে তারা পিছু হটলেও, পরে বিরাট বাহিনী এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালায়।
দয়াময় বাউড়ি অভিযোগ করেন, গুণ্ডা এসে ভোট লুঠ করছে, প্রকাশ্যে গুলি চালিয়েছে, বুথে যতজন পোলিং এজেন্ট ছিল, তাদের পিস্তল দেখিয়ে বার করে দিয়েছে, আমার পোলিং এজেন্ট ছিল ১১৪ নম্বরে, হাত ধরে বের করে দিয়েছে...আমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছিলাম...মানুষকে নিয়ে গিয়েছিলাম সঙ্গে, তারপর ওরা ছাপ্পা দিতে শুরু করেছে, হরেন সাঁইয়ের ছেলে এসে ফায়ারিং করেছে, ১০-১২টা গুলি চালিয়েছে।
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জামুড়িয়া ব্লক সভাপতি সাধন রায় বলেছেন, ওরাই আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
জামুড়িয়ার পরে ধাদকায় এন সি লাহিড়ি বিদ্যামন্দিরে বুথের বাইরে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ব্যাপক চাপানউতোর শুরু হয়। বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে সবাইকে এলাকা ছাড়া করে।
আসানসোল পুরসভার কুলটিতে, ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে, সত্যনারায়ণ ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের কাছে পরপর বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। আসানসোলের ৫২ নম্বর ওয়ার্ডে, গার্লস কলেজে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ দখলের অভিযোগ করে কংগ্রেস। অভিযোগ, বাধা দিতে গেলে কংগ্রেস প্রার্থী, তাঁর ছেলে ও পোলিং এজেন্টকে বেধড়ক মারধর করা হয়। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।