মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর (পশ্চিম বর্ধমান): মোবাইল গেমে আসক্তি সন্তানের। অভ্যেস বদলাতে বকাঝকা করেছিলেন মা, আর তারপরেই মর্মান্তিক ঘটনা। ঘর থেকে উদ্ধার হল কিশোরের ঝুলন্ত দেহ। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের ঘটনা।
শনিবার দুপুরে লাঞ্চ সেরেই ফের মোবাইল হাতে নিয়ে বসে পড়েছিল কিশোর। নজরে আসতেই মা বলেছিলেন, এত কষ্ট করে পড়াশুনো করানো হচ্ছে। তার ওপর সামনেই পরীক্ষা, না পড়াশোনা করে মোবাইলে গেম কেন খেলছে ছেলে। মায়ের বকাঝকার পরই দরজা বন্ধ করে দেয় বছর চোদ্দর কিশোর। আর খোলেনি। ঘণ্টাখানেক পর দরজা ভেঙে কিশোরকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের বেনাচিতি সংলগ্ন নতুনপল্লি এলাকায়। উদ্ধার করার পর অষ্টম শ্রেণির এই ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। কিশোরের পরিবারের দাবি, ছেলেকে মোবাইলে গেম খেলতে বারণ করাতেই অভিমানে আত্মঘাতী হয়েছে সে।
মৃতের দিদির দাবি, 'ওর পরীক্ষা ছিল সামনেই। মোবাইল রেখে মা পড়তে বসতে বলেছিল। তারপরই এরকম করল।'
ওই কিশোরের বাবা পেশায় লরিচালক। সামান্যই উপার্জন হওয়া সত্ত্বেও ছেলেকে ভর্তি করেছিলেন বেসরকারি স্কুলে। কিন্তু সামান্য বকাঝকাতে যে এত বড় পদক্ষেপ নেবে ছেলে ভাবতেই পারছেন না তিনি।
মৃতের বাবার কথায়, 'দুপুরে মাংস ভাত খেল। আমিই রান্না করেছিলাম। এরপর আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর ফোন আসে, শুনি এই ঘটনা।'
রবিবার দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে কিশোরের ময়নাতদন্ত হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মায়ের বকুনিতে অভিমানে আত্মঘাতী হয়েছে কিশোর। কিশোরের এই মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকে ডুবেছে গোটা এলাকা। সন্তানহারা মায়ের প্রশ্ন, ছেলের ভালর জন্যই তো বকেছিলেন তিনি, কেন বুঝলনা সে?
আরও পড়ুন: Purulia: শিশু চিকিৎসায় গাফিলতি, পরিকাঠামোর অভাব-সহ একাধিক অভিযোগে ধুন্ধুমার পুরুলিয়ার হাসপাতালে
আরও পড়ুন: Hooghly: শ্রীরামপুরে গাড়ির ধাক্কায় বাইক থেকে ছিটকে রেলব্রিজ থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু মহিলা আরোহীর