প্রকাশ সিনহা, পশ্চিম বর্ধমানঃ 'গরুপাচারকারীদের সঙ্গে কেন কথা বলতেন সায়গল হোসেন (Saigal Hossain) ?' আসানসোল জেলে (Asansol Jail) গিয়ে সায়গলকে জেরা সিবিআই-র (CBI)। মূলত একদিকে গরুপাচার মামলায় নিজাম প্যালেসে অনুব্রতকে (Anubrata Mandal) জেরা করছে সিবিআই। পাশাপাশি এদিন আসানসোল জেলে পৌঁছে যান সিবিআই-র ৩ জন অফিসার। এবং এদিন অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষীকে সেখানেই জেরা করেন ওই তদন্তকারী অফিসারেরা।


গরুপাচারের কত টাকা অনুব্রত মণ্ডলের কাছে এসেছিল এবং সেই টাকা কোথায় কোথায় রয়েছে বা বিনিয়োগ করা হয়েছে, এখন সেই তথ্যের হদিশ পেতেই সক্রিয় তদন্তে সিবিআই আধিকারিকরা।  অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে তদন্তকারীদের নজরে এখন বীরভূম জেলার একাধিক থানায় অফিসাররা। সিবিআই সূত্রে দাবি, গরুপাচার মামলায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ টি গরু বাংলাদেশে পাচার করেন ধৃত মূল অভিযুক্ত এনামূল হক। অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, পাচারের আগে প্রভাবশালীদের থেকে নির্দেশ আসত। সেইমতো গরুপাচারের জন্য সেফ প্যাসেজ করে দেওয়া হত। সায়গলকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাঁর ফোনের কল ডিটেলস থেকে বীরভূমের একাধিক থানার অফিসারদের নম্বর ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে। সেইসব অফিসারের একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। 


প্রসঙ্গত, দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের  সঙ্গে যৌথ সম্পত্তি রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের । সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে এমনই দাবি করেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির ৮০ পাতার চার্জশিট দিয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, মোট ৪৫টি সম্পত্তির নথি মিলেছে অনুব্রত, তাঁর পরিবার ও সায়গল হোসেনের নামে। কোনওটি সায়গলের সঙ্গে অনুব্রতর যৌথ সম্পত্তি, কোনওটি অনুব্রতর একার নামে, আবার কোনও সম্পত্তি তৃণমূল জেলা সভাপতির পরিবারের সদস্যদের নামে। উল্লেখ্য, গরুপাচার মামলায় নাম ধরে ধরে আজ অনুব্রত মন্ডলকে জেরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। গ্রেফতারির চার দিন পরেও 'মুখে কুলুপ দিয়ে রেখেছেন অনুব্রত, , তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারছেন না', বলেই দাবি তদন্তকারী অফিসারদের।  


আরও পড়ুন, 'ইডি-সিবিআই-কে তথ্য পৌঁছে দিয়েছেন কুণাল ঘোষ', বিস্ফোরক সৌমিত্র খাঁ


সূত্র মারফৎ খবর, 'জানি না, চিনি না', আজ সিবিআই-র জিজ্ঞাসাবাদের সময় বেশিরভাগ প্রশ্নের এমনটাই উত্তর দিয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। উল্লেখ্য, আগামী ২০ তারিখ অবধি এই হেফাজতের মেয়াদ রয়েছে। তাই হাতে আর বেশি সময় নেই। আজ দফায় দফায় জেরা পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। মূলত প্রচুর সম্পত্তি সায়গল হোসেন কিনেছিল। এই প্রচুর সম্পত্তি কি সায়গল হোসেনের নাকি অনুব্রত-র ? এটিই ছিল মূল প্রশ্ন। তবে এই প্রশ্নের যে জবাব দিয়েছেন অনুব্রত, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বলেই দাবি তদন্তকারী অফিসারদের।