মনোজ বন্দ্যোপাধ্য়ায়, পশ্চিম বর্ধমান: এক অসুস্থ বৃদ্ধ ব্যক্তির উপর মদ্যপ অবস্থায় আক্রমণ করেছিলেন এক ব্যক্তি। এরপরই সেই বৃদ্ধের পরিবারের লোক পাল্টা আক্রমণ করে সেই ব্যক্তিকে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যু (Death) হয় সেই ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের (West Burdwan) দুর্গাপুরে। এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে কোকোভেন থানার পুলিশ। দুর্গাপুরের এই ঘটনায় উত্তেজনা মঙ্গলবার সকালে। মৃত ব্যক্তির নাম রামপ্রসাদ সরকার, বছর পঞ্চাসের রামপ্রসাদ সরকার দুর্গাপুর স্টেশন বাস স্ট্যান্ডে ফুচকা বিক্রেতা ছিলেন। 


ঘটনাটি ঠিক কী হয়েছিল? 


ঘটনার সূত্রপাত, সোমবার রাতে। সূত্রের খবর, দুর্গাপুর নগর নিগমের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন শ্রমিক নগর এলাকায় পুরনো বাড়ির এলাকায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল রামপ্রসাদ সরকার। এক বৃদ্ধ প্রতিবেশীকে বাইরে খাটিয়া তে শুয়ে থাকতে দেখে তারও খোঁজ খবর নিতে যায় রামপ্রসাদ বাবু। ভুল বোঝাবুঝির শুরুটা ঠিক এইখান থেকেই। দু এক কথা হতে বাঁধে ঐ বৃদ্ধর পরিবারের সঙ্গে বচসা। তখনকার মতো পরিস্তিতি শান্ত হয়ে যায়, কিন্তু এরপর ঘরে ফিরে ঐ বৃদ্ধের ছেলে ও তার দলবল দুর্গাপুর স্টেশন বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন বাঁকুড়া মোড়ের কাছ থেকে রামপ্রসাদকে ধাওয়া করে তুলে আনে শ্রমিক নগর সংলগ্ন একটি মাঠের সামনে, শুরু হয় রামপ্রসাদের ওপর মারধর, অভিযোগ, রামপ্রসাদ সরকারকে ঐ বৃদ্ধর ছেলে ও তার দলবল পিটিয়ে খুন করেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রামপ্রসাদ সরকারকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় গতকাল রাতেই। এরপরই আজ ভোরেই মৃত্যু হয় রামপ্রসাদের।


রামপ্রসাদের পরিবারের অভিযোগ


রামপ্রসাসের পুরোনো বাড়ির পড়শীদের অভিযোগ, তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। তাঁরা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিন জনের ওপর। সেই তিনজনের নাম বিশ্বজিৎ জানা, সুরজিত সরকার, মনা দাস, আর শুভজিৎ সরকার। কোকোভেন থানার পুলিশ তিনজনকে আটক করলেও,অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। যদিও অভিযুক্তদের পরিবার যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।এইদিকে এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা, সুর চড়িয়েছে বিরোধী বিজেপি সিপিআইএম নেতৃত্ব. বিরোধীদের অভিযোগ, খোদ তৃণমূল কাউন্সিলার শিপুল সাহার  পাড়ার সামনের ঘটনা, সামনেই রয়েছে তৃণমূল পার্টি অফিস। আটক তিন অভিযুক্ত তৃণমূল পরিবারের সদস্য বলে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলার শিপুল সাহা স্বীকার করে নিয়েছেন, বিরোধীদের বিরুদ্ধে সব বিষয়ে রাজনীতি করার পাল্টা অভিযোগ এনেছে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলার শিপুল সাহা। সব মিলিয়ে গোটা ঘটনায় টানটান উত্তেজনা রয়েছে দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন  শ্রমিক নগর এলাকায়।