সৌমেন চক্রবর্তী, খড়গপুর : পদ থেকে অপসারিত যুব তৃণমূল সভাপতি। ছেলের অপসারণ নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল প্রার্থী। পুরভোটের মুখে যা নিয়ে সরগরম খড়গপুর (Kharagpur)। বয়স ৪০ পেরিয়ে যাওয়ায় অপসারণ, সাফাই তৃণমূল বিধায়কের (TMC MLA)। যা নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি।


খড়গপুর পুরসভার ৩৩ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী জহর পাল বলেন, এখানে ওর আইডেনটিটি জহর পালের ছেলে। এখানে আমাদের ভোটটাকে নষ্ট করার জন্য তোমরা চক্রান্ত করছ। এটা কী কথা? এটা কী কথা, তুমি আমাকে বল। আমার এলাকায় বদমায়েসের দল, চোরের দল, তারা এভাবে ইয়ে করবে। ফেসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপ করবে।


পদ থেকে অপসারিত ছেলে। যাঁর জেরে রাগে অগ্নিশর্মা তৃণমূল প্রার্থী। দলীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনে জড়িয়ে পড়লেন বাগবিতণ্ডায়। পুরভোটের মুখে তৃণমূল প্রার্থীর এমন আচরণ ঘিরে সরগরম রেল শহর খড়গপুরের রাজনীতি! 


বুধবার দলের ২ নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয় পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। অপসৃতদের মধ্যে রয়েছেন খড়গপুর শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অসিত পাল। অসিতের বাবা, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী। ৩৫ নং ওয়ার্ডে নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অসিতের বউদি। 


অসিতকে পদ থেকে সরিয়ে দিতেই ফেসবুকে তাঁর হয়ে একের পর এক পোস্ট করতে থাকেন যুব তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। ছেলের অপসারণের খবর আসতেই ফোনে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন অসিতের বাবা। জহর পাল বলেন, আমার ছেলে একটা সময় সরে যেতে চেয়েছিল। তখন সরায়নি। এখন ভোটের মুখে চক্রান্ত করে সরানো হচ্ছে..... কেন করবে? কোন কারণ? তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। নির্দলের হয়ে কাজ করলে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন কিসের ব্যবস্থা ? এতদিন নাওনি কেন ? ৪ মাস আগে ছেলে রিজাইন দিতে চেয়েছে।


কেন অসিতকে সরানো হল, তার কারণ স্পষ্ট করার পাশাপাশি, তিনি নির্দল প্রার্থীর হয়ে প্রচার করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল বিধায়ক ও পশ্চিম মেদিনীপুরে পুরভোটের পর্যবেক্ষক অজিত মাইতি বলেন, দলকে যতটা সময় দেওয়ার কথা সেটা দিচ্ছে না। তাই সরানো হল। নির্দলের হয়ে প্রচার করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


ভোটের মুখে এই ঘটনায় শাসক দলকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি সমিতকুমার মণ্ডল বলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এসব তো লেগেই থাকে। এই সবে শুরু হয়েছে।


অজিত মাইতি জানান, অসিতের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। ওর বয়স ৪০ পেরিয়ে গিয়েছে। সেইজন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


ভোটের মুখে এই ঘটনায় অস্বস্তি বাড়ল তৃণমূল নেতৃত্বের।