অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর: হাতি দেখতে আসাই কাল হল। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হল ১৪ বছরের কিশোরের। ৮ ঘণ্টা পর হাতিগেরিয়া জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের দেহ।


বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের দিক থেকে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে কেশিয়াড়িতে ঢোকে ৬০-৬৫টি হাতির দল।কয়েকদিন ধরে তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। গতকাল হাতি দেখতে জঙ্গলে ঢোকে ১৪ বছরের দেবব্রত মাহাতো। তারপর থেকে তার খোঁজ মিলছিল না। রাত ১১টা নাগাদ জঙ্গল থেকে ওই ছাত্রের দেহ উদ্ধার করেন বন দফতরের কর্মীরা। গতকাল রাতে তেলিপুকুর এলাকায় ৩টি বাড়িতে ভাঙচুর ও ধান খেত তছনছ করে হাতির দল। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। 


সম্প্রতি খড়গপুর শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল হাতির দল। গভীর রাতে মেদিনীপুরের দিক থেকে কংসাবতী নদী পেরিয়ে খড়গপুরে ঢুকে পড়েছিল শাবক-সহ ৯ জনের দলটি। খড়গপুর সদর হাসপাতালের পিছনে চাঁদমারি ময়দানের জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল ওই হাতির দল। যার জেরে খড়গপুর শহরে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। নিরাপত্তার কারণে জঙ্গলের চারদিক দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়ার পাশাপাশি, মোতায়েন করা হয়েছিল হুলা পার্টি। ছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। 


কখনও খাবার না পেয়ে লোকালয়ে এসে হামলা, কখনও বুঝতে না পেরে হাতিদের বেঘোরে প্রাণ হারানোর ভুরিভুরি ঘটনার সাক্ষী পশ্চিমবঙ্গ।  খাবারের খোঁজে অনেকসময়ই হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসে। কখনও খাবার পায়, কখনও আবার চাষের জমিতে হামলা চালায়। কখনও আবার হাতি নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়।


তবে এবার ঘুমের ঘোরে আর দাঁতালের মুখোমুখি হতে হবে না। বাঁকুড়া উত্তর বর্ণ বিভাগের বেলিয়াতোড় ফরেস্ট রেঞ্জের উদ্যোগে এক বিশেষ কৌশল নেওয়া হয়েছে বুনো হাতিদের জন্য। উত্তরবঙ্গ থেকে বিশেষ ঘাস এনে লাগানো হয় জঙ্গল এলাকায় এবং হাতিদের প্রিয় খাবার ও খাবার যোগ্য যে সমস্ত দেশি ফলের গাছ রয়েছে যেমন কলা, কাঁঠাল, ইত্যাদি গাছ লাগানো হচ্ছে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের জঙ্গলে।এতে খুশি সাধারণ মানুষ।


আরও পড়ুন, যাদবপুরের হস্টেলে ফের বহিরাগত-তাণ্ডব! প্রতিবাদ করতেই মাঝরাতে..


অপরদিকে, চলতি বছরের লক্ষ্মীপুজোতে উঠে এসেছে বাংলার এক পৃথক দৃশ্য। যেখানে হাতির হাত থেকে ফসল বাঁচাতে গজলক্ষ্মীর আরাধনা বাঁকুড়া জেলায়। হাতির হাত থেকে মাঠের ফসল বাঁচাতে এই আরাধনা গ্রামের মানুষের। জঙ্গল লাগোয়া গ্রাম রামকানালী। যেখানে হামেসায় ঢুকে পড়ে হাতির দল। ক্ষতি করে এলাকার ফসল। সেই হাতির হাত থেকে ঘরের লক্ষী অর্থাৎ মাঠের ফসল বাঁচাতে গ্রামে শুরু হয়েছিল গজ লক্ষীর আরাধনা। প্রায় শতাব্দী প্রাচীন এই পুজো। প্রাচীন রীতি রেওয়াজ ও বিশ্বাসের উপর ভর করে বাঁকুড়ার রামকানালী গ্রামে গজলক্ষ্মীর আরাধনায় মেতে ওঠেন গ্রামের মানুষ।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।