জয়ন্ত রায়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা: অবৈধ মদের ( Bootlegging ) ঠেকে বচসার জেরে খুনের (murder) অভিযোগে তোলপাড় মহেশতলায় (Maheshtala)। মৃতের নাম শান্তনু বাহাদুর বলে জানিয়েছে পুলিশ। বয়স ২২ বছর। শান্তনুর বাবার অভিযোগ, গত কাল রাত থেকে ছেলে বাড়ি ফেরেননি। খোঁজ করতে বেরিয়ে বাড়ির কিছুটা দূরেই ওই অবৈধ মদের ঠেকে তাঁকে রক্তাক্ত (blood) অবস্থায় দেখা যায়। 


কী ঘটেছিল?
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, মৃতের বাড়ি মহেশতলা পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর গেট ইয়ং বেঙ্গল কলোনিতে। শান্তনুকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়ার পর তাঁর বাড়ির লোকই ফোন করে পুলিশকে খবর দিয়েছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ দেখতে পায়, মল্লিকবাজারের রাস্তার পাশে এক অবৈধ মদের ঠেকে মাথায় আঘাত নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই তরুণ। খোঁজখবরে জানা যায়, মল্লিকবাজারের বিপরীতে একটি নির্মাণ প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। প্রায় প্রতি দিনই কিছু বন্ধুর সঙ্গে ওই এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত মদ্যপান করতেন তিনি। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে হইচই করারও অভ্যাস ছিল তাঁদের। গতকালও সম্ভবত একই ঘটনা ঘটে সেখানে। পুলিশের ধারণা, ধস্তাধস্তির সময়ই তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। আপাতত মহেশতলা থানার পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মহেশতলার ঘটনা চলতি বছরের আরও একটি স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে অনেককে। সেবার মদের আসরে দুই বন্ধুর বচসার জেরে গুলি চলেছিল। 

মদই কি খলনায়ক?
সে বার ইংরেজবাজার থানার নঘরিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছিল। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মনিরুল খান নামে এক জনকে লক্ষ্য করে গুলি চালান রকি শেখ নামে আর এক যুবক। ঘটনার পর থেকেই ফেরার রকি। নাকে গুলি লাগে মনিরুলের। মালদার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মনিরুলকে। তদন্তে নেমে যা জানা যায়, তাতে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা হয়েছিল মদই সম্ভবত খলনায়কের ভূমিকা পালন করেছে। বস্তুত রাজ্যের গত কয়েক মাস ধরেই 'বেআইনি মদের' জেরে একাধিক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেই বর্ধমান শহরে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পর পর মৃত্যু হয়। ৪ জনের অস্বাভাবিক মর্মান্তিক পরিণতি হয়। মদ খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে মৃত্যু? নাকি খাবারে বিষক্রিয়ার জেরে মৃত্যু? এনিয়েও তৈরি হয় রহস্য। বর্ধমান শহরের বুকে এহেন ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।অভিযোগ, বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর এলাকায় জিটি রোডের ধারে একটি খাবারের হোটেল থেকে মদ কিনে খান দু’জনে। তারপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। নামে খাবারের হোটেল হলেও, সামনেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মদের খালি বোতল। হোটেলটিকে সিল করে দিয়েছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমেছে বর্ধমান থানা। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেছেন, ' টক্সাইড অবস্থায় ২ জন ভর্তি হয়। মৃত্যু হয়েছে।' কিন্তু এতো গেল 'বেআইনি মদের' কাণ্ডকারখানা। উদাহরণ আরও অনেকও আছে। প্রেক্ষাপট আলাদা।


আরও পড়ুন:'পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে সফল শিল্প বোমা' ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ নিয়ে ঝাঁঝালো ট্যুইট শুভেন্দুর