নয়াদিল্লি: কারিগরি এবং প্রযুক্তি শিক্ষায় আঞ্চলিক ভাষা আজও ব্রাত্যই। সেই খামতি কিছুটা হলেও দূর করতে উদ্যোগী হল কেন্দ্র। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যবহারের নিরিখে পিছিয়ে থাকে ১০টি ভাষায় এ বার প্রযুক্তিগত এবং বৈজ্ঞানিক পরিভাষার অভিধান তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হল (Dictionary)। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত কমিশন ফর সায়েন্টিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল টার্মিনোলজি (CSTT)-র এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। শেখার পরিসরকে আরও বর্ধিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে (Education News)। 


CSTT জানিয়েছে, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিশিক্ষায় যে ১০টি ভাষার প্রতিনিধিত্ব সে ভাবে চোখে পড়ে না, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিশিক্ষায় সেই ভাষার পৃথক অভিধান তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আপাতত যে ১০টি ভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, সেগুলি হল-বোডো, সাঁওতালি, ডোগরি, কাশ্মীরি, কোঙ্কণি, নেপালি, মণিপুরি, সিন্ধি, মৈথিলি এবং সংস্কৃত। প্রত্যেক ভাষার পৃথক অভিধান তৈরি করা হবে। ভাষা পিছু ৫ হাজার শব্দ জায়গা পাবে অভিধানে। 


সবরকম সংস্করণেই পাওয়া যাবে এই অভিধান। কাগজে ছাপা হরফে প্রত্যেক ভাষায় ১ থেকে ২ হাজার অভিধান প্রকাশ করা হবে। বিনামূল্যে মিলবে ডিজিটাল সংস্করণও। সেখানে নির্দিষ্ট শব্দ বসিয়ে তার অর্থ খুঁজে পাওয়ার উপায়ও থাকবে। যে ১০টি ভাষাকে প্রাথনিক পর্যায়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেগুলি অষ্টম তফসিল অনুযায়ী ২২টি সরকারি ভাষার মধ্যেই পড়ে। কিন্তু পঠনপাঠনে এই ১০ ভাষার ব্যবহারই হয় না তেমন। কারণ বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তির ব্যাখ্যায় সংশ্লিষ্ট ভাষায় পর্যাপ্ত শব্দের জোগান নেই। ফলে প্রাথমিক স্কুলে কোথাও কোথাও ব্যবহৃত হলেও, প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের ব্যাখ্যায় ইংরেজিই ব্যবহার করতে হয়।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: শুধুই বাজেট তৈরি নয়, পোষ্যকে আদরও ট্রেডমিলেই, আদুরে চারপেয়ের সঙ্গে ঘাম ঝরালেন মমতা


অভিধান তৈরিতে আপাতত যে ১৫টি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেগুলি হল- সাংবাদিকতা, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, রসায়ন, মনোবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণীবিদ্যা, পদার্থবিজ্ঞান, অর্থনীতি, আয়ুর্বেদ, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, কৃষিবিদ্যা, সিভিল এবং ইলিকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। এতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন।


রাজ্যস্তরে বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, এ ছাড়াও ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি, যারা  কমন ইউনিভার্প্রসিটি এন্ট্রান্স টেস্ট (CUET), জয়েন্ট এবন্ট্রান্স এগজামিনেশন (JEE) মেন -এর মতো প্রবেশিকা পরীক্ষা নেয়, তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে এই অভিধান, যাতে পড়ুয়াদের কাছেও তা পৌঁছয়। অভিধান তৈরিতে সাহায্য নেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC), ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট (NET)-এর। 


১৯৫০ সালে যখন সরকারি ভাষার তালিকা তৈরি করা হয়, তাতে ১৪টি ভাষা যুক্ত করা হয়। ১৯৬৭ সালে সেই তালিকায় যোগ করা হয় সিন্ধি, ১৯৯২ সালে কোঙ্কণি, মণিপুরি, নেপালি এবং ২০০৪ সালে বোডো, ডোগরি, মৈথিলি ও সাঁওতালি। ১৯৬১ সালে গড়ে তোলা হয় CSTT. বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারতীয় ভাষাকে বিকশিত করে তোলার দায়িত্ব এই সংগঠনের হাতেই। আইআইটি বম্বে- মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে তারা, যাতে অনলাইন মাধ্যমে দ্রুত পড়ুয়াদের কাছে নয়াঅভিধান পৌঁছে দেওয়া যায়। জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-তে স্কুল-কলেজে আঞ্চলিক ভাষাগুলিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই পরিকল্পনা রূপায়ণের পথেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। 


 


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI