কলকাতা: ছোট থেকেই কথা বলতে বা শুনতে অপারগ। আর পাঁচজন ছেলেমেয়ের মতো করে তাঁর দিন কাটেনি। তা বলে দমে যাননি রঞ্জিত। পাঁচজনের মতো করে জীবন কাটছে না তো কী! নিজের মতো করে তো কাটানোই যায়। আর নিজের পথে চলেই অনন্য নজির গড়েন ২৭ বছরের এই তরুণ। দক্ষিণ ভারতে তামিলনাডুর কোয়েম্বাটোরের বাসিন্দা ডি রঞ্জিত। ছোট থেকে কথা বলা বা শোনার ক্ষেত্রে শারীরিক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু পাশে ছিল বাবা-মা। মা আবার ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। মায়ের হাত ধরেই প্রাথমিকভাবে পড়াশোনা করতে শেখে ছেলে। শিখে নেয় লিপ রিডিংয়ের প্রক্রিয়া - যে পদ্ধতিতে অন্যের ঠোঁট দেখে বোঝা যায় সে কী বলছে। এর পরেই পড়াশোনার জগতে রঞ্জিতের জয়যাত্রা শুরু।
ছোট থেকেই মেধাবী!
ছোট্টবেলা থেকেই প্রচণ্ড মেধাবী ডি রঞ্জিত। মা অম্রুতাভালি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর বিএড-এর ট্রেনিং ছিল স্পেশাল এডুকেশন। ফলে ছেলেকে এই পরিস্থিতিতেও জীবন যুদ্ধের জয়ের কায়দা শেখাতে পেরেছিলেন। লিপ রিডিং শেখার পর থেকেই পড়াশোনায় নজর কাড়তে শুরু করে রঞ্জিতের মেধা। ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষায় শ্রবণশক্তিহীনদের তালিকায় গোটা রাজ্যের মধ্যে র্যাঙ্ক করেন রঞ্জিত। ৮০ নম্বরে নাম ছিল তাঁর। এর পর পিএসজি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
ইন্টারভিউতে প্রত্যাখান!
পড়াশোনা শেষ করার চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যান রঞ্জিত। সমস্ত প্রশ্নের সফলভাবে উত্তর দেওয়া সত্ত্বেও তাঁকে প্রত্যাখ্যান করে ওই সংস্থা। এর পরেই রোখ চেপে যায় মাথায়। আর চাকরির চেষ্টা না করে ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। পরীক্ষার প্রস্ততি নিতে চেন্নাইয়ে চলে যান রঞ্জিত। সেখানে গিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার পর ২০২০ সালে পরীক্ষা দিতে বসেন রঞ্জিত। আর যা অনেকেই করতে পারেন না , তা করে দেখান তিনি। প্রথমবারের চেষ্টায় ডি রঞ্জিত সফল হন। তাঁর ৭৫০ র্যাঙ্ক রীতিমতো চমকে দেয় সকলকে।
রঞ্জিতের স্বপ্ন
ছোট্ট থেকেই লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে এগিয়েছেন ২৭ বছরের আইএএস তরুণ। লক্ষ্য অর্জন করতে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছেন। দিনে ১২ ঘন্টা করে পড়াশোনাও করেছেন। সিভিল সার্ভিসে আসার পর তাঁর ইচ্ছা বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য কিছু করতে পারা। সেই ইচ্ছে নিয়েই এবার নিজের কর্মজীবন শুরু করেছেন রঞ্জিত।
আরও পড়ুন - Skin ageing facts: বয়স বাড়তেই কেন ত্বক কুঁচকে যায় ? কী এর রহস্য ?
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI