বিষয়: ইংরেজি
শিক্ষিকা: দেবলীনা মিত্র, বালিগঞ্জ শিক্ষা সদন স্কুল
কলকাতা: একে তো জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। তার ওপর দু বছর অতিমারীর কারণে ফোনের ছোট্ট স্ক্রিনেই আবদ্ধ ছিল পড়াশোনা। সেসব বাধা কাটিয়ে এবার অফলাইনে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Examination 2022)। ৭ মার্চ থেকে শুরু। প্রথম দিনে, প্রথম ভাষার পরীক্ষা। তারপরের দিনই দ্বিতীয় ভাষা (Second Language)। যে সকল পড়ুয়াদের দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি (English) তাদের এই বিষয়ে নিয়ে খানিক যেন ভয় বেশিই থাকে। তার ওপর মাধ্যমিকের বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই বাংলা মাধ্যম স্কুলের। ফলে একে তো বোর্ডের পরীক্ষা, তার ওপর বিদেশি একটি ভাষা। কিন্তু নিয়মিত অভ্যাসে সেই ভীতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব, মত বালিগঞ্জ শিক্ষা সদনের শিক্ষিকা দেবলীনা মিত্রের। আরও কীভাবে নিজের 'রাইটিং স্কিল' ভাল করা যাবে, কীভাবে পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিলে ভাল, পরীক্ষার্থীদের জন্য বিস্তারিত জানালেন তিনি।
লেখার অভ্যাস ও খুঁটিয়ে চ্যাপ্টার পড়া
দেবলীনা মিত্র জানাচ্ছেন, এই বছর যারা মাধ্যমিক দেবে তারা গত দু'বছর কোনও পরীক্ষা সেভাবে দেয়নি, স্কুলেও যেতে পারেনি। যেটুকু হয়েছে অনলাইন। সুতরাং সত্যিই এটা চিন্তার বিষয় যে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত লেখার যে অভ্যাস সেটা একেবারে চলে গেছে। তার ওপর ইংরেজি নিয়ে খানিক ভয়ও থাকে। তবে তাঁর কথায়, 'এটুকু বলতে পারি, যেহেতু সিলেবাসটা ছোট তাই যেটুকু সিলেবাসে আছে সেটা একটু ভাল করে পড়বে। এবং একই সঙ্গে বোর্ডের বিভিন্ন টেস্টপেপার বা অন্যান্য সংগঠনের টেস্টপেপার গুলো যদি নিজেরা লিখে লিখে প্র্যাক্টিস করে তাহলে খুব উপকার হবে।'
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি বইয়ের নাম 'ব্লিস'। সেখানে যে গল্প (Prose) ও কবিতা (Poetry) আছে সেগুলো খুঁটিয়ে পড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন শিক্ষিকা। পরীক্ষায় সাধারণত একটা গল্প ও একটা কবিতা থেকে প্রশ্ন আসে। প্রশ্নপত্রের প্যাটার্ন অনুযায়ী, চ্যাপ্টারের অংশ তুলে দেওয়াই থাকে, সেই থেকে প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয়। তবে দেবলীনা মিত্রের মত, 'পরীক্ষায় 'সিন' অংশে টেক্সট দেওয়া থাকলেও আমার মনে হয় পড়ুয়াদের কবিতা-গল্প একটু ভাল করে পড়ে, সেটা বুঝে তারপর উত্তর লেখা উচিত। যারা পরীক্ষা দেবে এবছর তাদের এখন প্রয়োজন সময় ধরে লেখা অভ্যাস করা।'
গ্রামার ও রাইটিং স্কিল (Grammar and Writing Skill)
ইংরেজির আরও দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গ্রামার ও রাইটিং স্কিল। বলা হয়, যত বেশি করে প্র্যাক্টিস করবে, তত বেশি ভাল গ্রামার রপ্ত করতে পারবে। অন্যদিকে 'রাইটিং স্কিল'-এ থাকে ৩০ নম্বর। শিক্ষিকা বলছেন, 'লেখার অভ্যাস না থাকলে ওটা আরও একটা ভয়ের জায়গা। কারণ সেখানে পুরোটা নিজেকে লিখতে হবে। নোটিস, রিপোর্ট বা লেটার লেখার জন্য প্রাথমিক কিছু পয়েন্ট দেওয়াই থাকে। ছাত্রছাত্রীরা যেন প্রত্যেকটা রাইটিংয়ের ফর্ম্যাট মনে করে ঝালিয়ে নেয়। এছাড়া অতিমারী সংক্রান্ত বা কোভিড সংক্রান্ত বিষয় একটু দেখে যাওয়া ভাল মনে হয়। কাগজ পড়ে বা খবর শুনেই হোক, এই ধরনের টপিকে যদি একটু জ্ঞান থাকে তাহলে ভাল। এসব থেকে নাই আসতে পারে কিছু, তবে যেহেতু এগুলো সাম্প্রতিক বিষয় তাই গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।' তিনি জানাচ্ছেন, কোনও বছরই রাইটিংয়ে সব কটা টপিক কঠিন আসে না। সকলের মান বুঝে মিলিয়ে মিশিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়।
আনসিন (Unseen)
২০ নম্বরের আনসিন কম্প্রিহেনশন থাকে। স্কুল খোলা থাকলে যে প্র্যাক্টিসটা করা সম্ভব সেটা কোভিড আবহে হয়নি। দেবলীনা মিত্র পরামর্শ দিচ্ছেন, 'পরীক্ষার আগে কয়েকটা অভ্যাস করে নিক। এছাড়া পরীক্ষায় আসা প্যাসেজটা অন্তত দুবার যেন অবশ্যই পড়ে। না পড়ে চোখ বন্ধ করে শুধু প্রশ্ন দেখে উত্তর খোঁজা একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। একবার পড়েই বুঝে লিখে ফেলতে পারব, এই মনোভাবটাও কিন্তু উচিত নয়।'
বুকলেটে পরীক্ষা
মাধ্যমিকে ইংরেজি প্রশ্নপত্রের মধ্যেই উত্তর লিখতে হয়। ফলে সেটা কত শব্দের মধ্যে লিখলে ভাল, এবং কীভাবে ওই নির্দিষ্ট স্থানে পুরো উত্তর ধরানো সম্ভব, সেটাও বারবার পড়ুয়াদের অভ্যাস করতে পরামর্শ দিচ্ছেন শিক্ষিকা। এছাড়া তাঁর মতে, পড়ুয়া 'সিন', 'আনসিন', 'গ্রামার' ও 'রাইটিং স্কিল'-এর মধ্যে যে অংশটা নিয়ে বেশি সচ্ছন্দ সেটাই আগে শেষ করা উচিত। তবুও দেবলীনা মিত্রের বক্তব্য, 'আমার মনে হয় সিন অংশটা আগে করে নেওয়া ভাল কারণ ওটা চেনা জিনিস থাকে। ফলে ভাবতে হবে না বেশি। তবে সময় প্রচুর থাকে। সেদিক থেকে সমস্যা হওয়ার কথা না।'
তবে লাস্ট মিনিট টিপস সাজেশন মাত্র। বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের পরামর্শ পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে। তবে একইসঙ্গে নিজস্ব প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাসের উপর আস্থা রাখতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। রইল শুভেচ্ছা।
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI