নয়াদিল্লি : জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে নানান আপত্তি-অভিযোগ আছে বিভিন্ন রাজ্যে। ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গও।  তারই মধ্যে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈদিক গণিত, যোগ, আয়ুর্বেদ-সহ বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যক্রম চালু করার বিষয়ে ‘গাইডলাইন’ প্রকাশ করল ইউজিসি।


 কেন্দ্র জাতীয় শিক্ষানীতিতে ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চায়। সেই কথা মাথায় রেখেই এই বিষয়গুলি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর কথা ভাবা হয়েছে।  বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবার তা পাঠক্রমে কার্যকর করতে নির্দেশিকা প্রকাশ করল। 


শুধু দেশের পড়ুয়াদের মধ্যে দেশীয় সংষ্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়া নয়, ইউজিসি (UGC)  নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বিদেশি পড়ুয়াদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যেও এই বিষয়গুলি পড়ানো হবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিষয় তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে বৈদিক অঙ্ক (Vedic Math), যোগ, আয়ুর্বেদ (Ayurveda), সর্বজনীন মানবিক মূল্যবোধ, সংস্কৃত, সঙ্গীত, শাস্ত্রীয় নৃত্যের মতো বিভিন্ন বিষয়। 


এছাড়াও ভারতীয় সনাতনী কিছু শিল্পকেও কলেজ ইউনিভার্সিটির বিষয় হিসেবে পড়ানোর কথা বলা হয়েছে নির্দেশিকায় । কেউ চাইলে শিখতে পারেন মৃৎশিল্প, বাঁশ-বেতের শিল্প। এছাড়া টেরাকোটা, মধুবনির মতো জনপ্রিয় শিল্পচর্চাও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার আওতায় আনা হবে। এছাড়াও নির্দেশিকায় বলা হয়েছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসেই থাকবেন কারুশিল্পীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থেকেই পড়ুয়াদের প্রশিক্ষিত করবেন তাঁরা। 


নির্দেশিকায় উল্লেখ, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের তালিম দেবেন শিল্পীরা । থাকবে গবেষণার সুযোগও । ইউজিসি চায়, এর মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষানীতির  মিশন অনুসারে ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে প্রশিক্ষিত হয়ে উঠুন পড়ুয়ারা। এছাড়াও বিদেশি ছাত্রছাত্রীদেরও এই বিষয়গুলি পড়ানো হবে। 


২০২০ সালে যে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি আনা হয়, তাতে একগুচ্ছ পরিবর্তন ছিল। যেখানে বলা হয়- 


১. ইউজিসি, এআইসিটিই- র মতো উচ্চশিক্ষার নিয়ামক সংস্থা তুলে একটিমাত্র নিয়ামক সংস্থা হবে। 


২. স্নাতক স্তরের কোর্সের মেয়াদ হবে ৪ বছর। 


৩. স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সের মেয়াদ হবে ১ অথবা ২ বছর। 


৪. পাঁচ বছর ইন্টিগ্রেটেড পদ্ধতিতেও স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর করা যাবে। 


৫. নতুন শিক্ষানীতিতে তুলে দেওয়া হয়েছে এম ফিল কোর্স। 


৬. কলেজে স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর স্তরে প্রবেশিকা পরীক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির হাতে।  


৭. কলেজগুলিকে প্রশাসনিক সহ অর্থনৈতিক স্বশাসন দেওয়া হচ্ছে। 


৮. একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান, কলা বিভাগের তফাৎ থাকবে না। 


৯. কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লেও তার সঙ্গে বাংলা, সঙ্গীতের মতো বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ থাকবে। 


১০. নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ৮ টি সেমিস্টারের কথা বলা হয়েছে। 


১১. পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত আঞ্চলিক ভাষায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 


১২. প্রাক-প্রাথমিকে যোগ হবে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণী, এরপর তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম শ্রেণীকে রাখা হয়েছে প্রাথমিকে, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেণী উচ্চ প্রাথমিক। 


১৩. স্কুল শিক্ষায় ত্রি ভাষা নীতি চালু করা হবে। যেখানে আঞ্চলিক, ইংরেজি ভাষার সঙ্গে সংস্কৃতকেও রাখার কথা বলা হয়েছে।


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI