কলকাতা: ইতিহাস (History) মানে কি পাতার পর পাতা লেখা! না কি সেখানে কোনও ভাললাগার বিষয় আছে? ইতিহাসে আদৌ কি ভাল নম্বর ওঠে? কোন প্রশ্নের জন্য ঠিক কতটা লেখা প্রয়োজন? সাল মনে রাখার উপায় কী? স্কুল স্তর হোক, বা স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ইতিহাসের প্রস্তুতিতে এই প্রশ্নগুলি অতি পরিচিত। কিন্তু সরকারি চাকরির পরীক্ষার ক্ষেত্রেও কি এক? বিশেষত WBCS -এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় ইতিহাস ঠিক কেমন? কীভাবে শুরু করা যাবে প্রস্তুতি? ঠিক কোন কোন বিষয়গুলি মনে রাখতেই হবে? এই সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন WBCS অফিসার ঋষিকা দাস। বর্তমানে যিনি রাজারহাটের বিডিও।


ইতিহাসকে ভয় নয়: একটা বিষয় মনে রাখতে হবে ইতিহাস কোনও নতুন বিষয় নয়। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত প্রত্যেককে এই বিষয়টা পড়তে হয়। ফলে যা ইতিমধ্যেই পড়ে এসেছি, সেটাই আরেকবার পড়তে হবে। অনেকেরই মাধ্যমিক স্তরের পর ইতিহাস থাকে না। তাঁদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। প্রয়োজনে মাধ্যমিক স্তরের বইটা পড়ে নেওয়া যায়। তাতে জড়তা কাটবে। এরপর প্রস্তুতি শুরু করা যেতে পারে।


প্রাচীন এবং মধ্যযুগের ভারতের ইতিহাস: ইতিহাসের প্রথম ধাপের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন এবং মধ্যযুগের ভারতের ইতিহাস। এই ইতিহাস পড়ার সময় প্রথমেই মনে রাখতে হবে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত যা পড়া হয়েছে সেগুলিই মূলত রয়েছে। যেমন ধরা যাক প্রাচীন ইতিহাসে রয়েছে হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো। এছাড়াও বিভিন্ন সভ্যতা থাকে প্রাচীন ইতিহাসে। এই অংশগুলি থেকে পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতে পারে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য। বা কোনও একটা বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে প্রশ্ন আসতে পারে সেটা কোথায় পাওয়া গিয়েছে। এর পাশাপাশি বেদান্ত-র অংশও গুরুত্বপূর্ণও।


আধুনিক ভারতের ইতিহাস: আধুনিক ভারতের মধ্যে অতি পরিচিত অংশ স্বাধীনতা সংগ্রাম। ব্রিটিশ শাসন পর্ব, পর্তুগিজ, ডাচ, বিভিন্ন পর্যায়ের শাসনকাল কেমন ছিল ভারতে এই অংশটা গুরুত্বপূর্ণ। ভাইসরয়, কোন সময় কে গভর্নর জেনারেল ছিলেন, তাঁদের সময়কাল, এই অংশগুলি খুঁটিয়ে পড়তে হবে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের  পরিচিতি। বিশেষত জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনের সময়, কে সভাপতি হয়েছিলেন, এই অংশগুলি গুরুত্বপূর্ণ। আত্মীয় সভা, ব্রাহ্মসমাজের মতো অংশও দেখে যেতে হবে।


ইতিহাস পড়ার নিয়ম: ইতিহাস মানে অনেক লিখতে হবে এই ধারণা অন্তত প্রিলিমসের ক্ষেত্রে ভুল। কারণ এখানে সবটাই MCQ ভিত্তিক প্রশ্ন। পড়ার আগে গল্প পড়ছি এটা মাথায় রাখতে হবে। তাহলে পড়াটা অনেক সহজ হবে। আরেকটা বিষয় টাইমলাইন দেখে পড়া। কোন ঘটনা কখন হয়েছিল, সেটা মাথায় রাখলেই পরের অংশটা মনে রাখা সহজ হবে। এটা বইতেও মার্ক করে রাখা যায়, আবার ফ্লো-চার্ট বা টাইমলাইন হিসেবে লিখেও পড়া যায়। এর পাশাপাশি কোন নির্দিষ্ট সাল ধরে, সেই সালে কী হয়েছিল সেটাও আলাদা করে খাতায় লিখে রাখলে পড়তে সুবিধা হবে।


খুঁটিয়ে পড়ার অভ্যাস : সিলেবাস শেষ করার লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি খুঁটিয়ে পড়ার অভ্যাসও তৈরি করতে হবে। কারণ প্রশ্ন ঘুরিয়ে আসার সম্ভাবনা কিন্তু রয়েছে। তাই এই অভ্যাসটা প্রস্তুতি পর্ব থেকে শুরু করতে হবে। কোনও অংশই একদম পড়ব না বা ছেড়ে দেব সেটা করলে নম্বর ভাল পাওয়া যাবে না। পড়ার পাশাপাশি লেখার অভ্যাস, এবং নিজে MCQ তৈরি করার অভ্যাস করলে পড়াটা মনে থাকবে।


MCQ নির্ভর পড়াশোনা নয়: MCQ নির্ভর পড়াশোনা করলে নম্বর কম পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ শুধু MCQ সমাধানের অর্থ হল সিলেবাসের সংশ্লিষ্ট অংশের ওই একটা লাইনই জানা হল। বাকি অংশ থেকে প্রশ্ন এলে তা যদি পড়ার মধ্যে না হয়, তাহলে কোনওভাবেই নম্বর পাওয়া যাবে না। অনেক মোটা মোটা বই পড়ার প্রয়োজন নেই। অনেক ছোট ছোট বই পড়েও প্রিলিমসে ভাল নম্বর পাওয়া সম্ভব।


আরও পড়ুন: WBCS Exam Preparation: মনসংযোগের জোরেই হতে পারে বাজিমাত! WBCS-এ অঙ্কের প্রস্তুতির খুঁটিনাটি


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI