কালীগঞ্জ: নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যাঁকে বাংলায় রাজ্যপাল করে পাঠিয়েছেন, তিনি রাজ্যপালের পদটিকে কলঙ্কিত করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক। শ্লীলতাহানির মামলার প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক দাবি করেন, রাজ্যপাল রাজ্য ছেড়ে পালিয়েছেন বলে। (Abhishek on Governor Bose)


রবিবার নদিয়ার কালীগঞ্জে দলের কৃষ্ণনগরের প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের হয়ে প্রচারে যান অভিষেক। সেখানেই রাজ্যপাল এবং বিজেপি-কে নিশানা করেন তিনি। অভিষেক বলেন, "অমৃতা রায় ভোট চাইতে এলে প্রশ্ন করুন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করার যে হুমকি দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা, সে ব্যাপারে অবস্থান কী? কেন্দ্র থেকে  যাঁকে রাজ্যপাল নিয়োগ করে পাঠানো হয়েছে, তিনি রাজ্যপালের পদটিকে কলঙ্কিত করেছেন। মেয়ের বয়সি একটি বোনের শ্লীলতাহানি করেছেন উনি। থানায় গিয়ে তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন। আর পর দিনই রাজ্যপাল বাংলা ছেড়ে, লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। বিজেপি-র অবস্থান কী?"


সন্দেশখালির ঘটনায় যে ভাইরাল ভিডিও সামনে এসেছে, সেই নিয়েও এদিন আক্রমণ শানান অভিযোগ। তিনি বলেন, "সন্দেশখালি নিয়ে অনেক গলা ফাটিয়েছিলেন। কাল দেখেছেন তো? প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, বাংলার মানুষকে ছোট করেছে। মহিলাদের ২০০০ টাকা করে দিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করিয়েছে। মহিলাদের সম্ভ্রম, ইজ্জত ২০০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে দিল্লির কাছে। আমি বলছি না, বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি বলছেন।"


আরও পড়ুন: CV Ananda Bose: 'রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্তের অধিকার নেই কারও', শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে বিবৃতি রাজভবনের


অভিষেকের এই আক্রমণে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাঁর কথায়, "উনি কাকে কলঙ্কিত বলছেন? শাসকদলের মন্ত্রীরা জেলে গড়াগড়ি খআচ্ছেন, বান্ধবীর বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে, সেই কলঙ্ক আগে মুথুন, তার পর অন্যের নামে অভিযোগ করবেন। একজন অপদার্থ রাজনীতিক, শুধু বড় বড় ভাষণ দিয়ে বেড়ান।"


গত বৃহস্পতিবার রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী এক মহিলা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। স্থায়ী নিযুক্তি এবং উন্নতির প্রলোভন দেখিয়ে রাজ্যপাল তাঁর সঙ্গে দু'-দু'বার অশালীন আচরণ করেন বলে দাবি করেন ওই মহিলা। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে না পারলেও, রাজভবনে চিঠি পাঠিয়ে সিসিটিভি ফুটেজের আবেদন জানায় লালবাজার। রাজভবনের তরফে সেই সিসিটিভি ফুটেজ এখনও দেওয়া হয়নি, তার মধ্যেই এদিন বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পুলিশ বা আদালত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে না। রাজভবনের কর্মীদেরও এ নিয়ে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে। শুক্রবারই কেরল গিয়েছেন রাজ্যপাল।