বসিরহাট: লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় আট দফায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে এবার সরব হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় সাত দফাচ ভোটগ্রহণও আসলে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বৈমাতৃসুলভ আচরণের পরিচয় বলে মন্তব্য করলেন। বিজেপি-কে বাংলা-বিরোধী বলে তাদের বাংলা থেকে বিসর্জন দেওয়ার ডাক দিলেন অভিষেক। (Abhishek Banerjee)


বুধবার বসিরহাটে তৃণমূলের হয়ে সভা করেন অভিষেক। সেখানেই সাত দফায় ভোটগ্রহণ নিয়ে সরব হন অভিষেক। তিনি বলেন, "সাত দফায় ভোট করছে। করোনার সময় বলেছিল, কোভিড হচ্ছে বলে আট দফায় ভোট করাতে হচ্ছে। এখন কী হচ্ছে শুনি? এখন কী অজুহাত, কী টালবাহানা? তামিলনাড়ু, কেরল, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রে ক'দফায় ভোট হয়?" (Lok Sabha Elections 2024)


বিধানসভা নির্বাচনের উল্লেখ করেন এদিন বিজেপি-র উদ্দেশে অভিষেক বলেন, "আগের বার আট দফায় ভোট করেও গোহারা হেরেছেন, এবার সাত দফাতেও গোহারা হারবেন। সাত দফা, আট দফা, মানুষ আপনাদের বৈমাতৃসুলভ আচরণের জবাব দেবেন। ধারাবাহিক ভাবে আপনাদের বাংলা-বিরোধী আচরণের প্রতিশোধ নেবেন মানুষ। এই নির্বাচন কেন্দ্রে সরকার নির্বাচিত করার নয়, বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করারও নয়, এই নির্বাচন প্রতিরোধের, প্রতিশোধের এবং শিক্ষা দেওয়ার। বাংলা থেকে বাংলা-বিরোধীদের শিকড় সমেত উপড়ে ফেলার নির্বাচন।"


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: ED, CBI, আদালত সঙ্গে রয়েছে, তাও বকেয়ার হিসেব দেওয়ার ক্ষমতা নেই BJP-র: অভিষেক


কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেও এদিন সরব হন অভিষেক। তিনি বলেন, "আমাদের সরকার কথা দিয়ে কথা রাখে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্য়াশ্রী পাচ্ছেন কি না বলুন! বিজেপি ১০ বছর আগে বলেছিল, অচ্ছে দিন আসবে। প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেবে। কেউ পেয়েছেন টাকা? প্রধানমন্ত্রী বছরে ২ কোটি চাকরি হবে, ২০২২ সালের মধ্যে সবার মাথায় ছাদ থাকবে বলেছিলেন, আজ ২০২৪, হয়েছে কি? উল্টে আপনাদের বাড়ির টাকা আটকে রেখে দিয়েছেন।"


বিজেপি-কে বহিরাগত বলেও এদিন কটাক্ষ করেন অভিষেক। মানুষের উদ্দেশে বলেন, "আপনারা কি চান তৃণমূলের বাংলার নেতারা দিল্লির নেতাদের পায়ে ধরুক, আত্মসমর্পণ করুক, পদলেহন করুক, বশ্যতা শিকার করুক, মেরুদণ্ড বিক্রি করুক? পঞ্চায়েতের সময় বলেছিলাম, অধিকারকে সামনে রেখে ভোট দিন, ১০০ দিনের টাকা ছিনিয়ে আনব। আমরা দিল্লি গিয়েছিলাম। চুলের মুঠি ধরে টেনে-হিঁচড়ে বের করে দিয়েছে। মহিলাদেরও টেনে-হিঁচড়ে বের করে দেয় মানুষের প্রাপ্য চাইতে যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাতে গিয়েছিলেন। যখন দেখলাম করবে না, কেন্দ্রের পাপের টাকা আমরা মিটিয়ে দিয়েছি। ৫৯ সক্ষ ১০০ দিনের কাজের শ্রমিক পাঠিয়ে দিয়েছি আমরা। এটাই দিদির গ্যারান্টি। পরিবারের সব মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিই আমরা। সেই টাকা আরও বাড়তে চলেছে। ১ এপ্রিল থেকে বছরে ৬০০০-এর পরিবর্তে ১২০০০ টাকা পাবেন। তফসিলি জাতি-উপজাতিরা বছরে ১২০০০-এর পরিবর্তে ১৪৪০০ টাকা পাবেন।" বাংলার খেটে খাওয়া মানুষের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে বলে এদিন অভিযোগ করেন অভিষেক। টাকা দিয়েছে বলে বিজেপি দাবি করলেও, গত তিন বছরে তারা ১০ পয়সা দিয়ে থাকলে, তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন বলে জানান অভিষেক। টাকার হিসেব প্রকাশ করতে আবারও বিজেপি-কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি।