কলকাতা: গত ১০ মার্চ, শিবরাত্রির দিন নন্দীগ্রামে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সফর বাতিল করে তাঁর কলকাতায় ফিরে আসা এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলা, রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল এই ঘটনায়।
তৃণমূলের দাবি, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার পেছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। বিজেপির পাল্টা দাবি, সহানুভূতি আদায় করতে দুর্ঘটনা তত্ত্ব সাজিয়ে নাটক করছেন তৃণমূল নেত্রী। নন্দীগ্রামে মমতার আহত হওয়ার নেপথ্য কারণ কী হতে পারে, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
তবে আহত হওয়ার পর কলকাতায় ফিরে পায়ে প্লাস্টার নিয়ে হুইলচেয়ারে চেপেই প্রচার শুরু করে দেন মমতা। এবং প্রত্যেকটি জনসভায় চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন বিজেপিকে। সর্বত্র তাঁর বক্তব্যের নির্যাস, তাঁকে ‘আহত’ করেও লাভ হবে না কোনও দলের। বিরোধীরা বলছে, হুইলচেয়ারে বসে প্রচার করে সহানুভূতি কুড়োতে চাইছেন মমতা। সত্যিই কি তাই? মমতার হুইলচেয়ারে বসে প্রচারে কি বিধানসভা ভোটে সহানুভূতির হাওয়া পাবে তৃণমূল, নাকি উল্টে ক্ষতি হবে? সাধারণ মানুষ কী মনে করছেন, তা নিয়ে জনমত সমীক্ষা চালিয়েছিল সি ভোটার। এবিপি আনন্দ-সি ভোটার সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৪২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, মমতা হুইলচেয়ারে চেপে প্রচার করায় বিধানসভা ভোটে লাভ হবে তৃণমূলের। তবে বিপরীত মতও রয়েছে। ৩১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, মমতা হুইলচেয়ারে বসে প্রচার করায় তৃণমূলের ক্ষতি হবে। ১৬ শতাংশ মানষের মত, মমতার হুইলচেয়ার-প্রচারে নির্বাচনে কোনও প্রভাব পড়বে না। আর ১১ শতাংশ মানুষ বলছেন, এতে তৃণমূলের লাভ না ক্ষতি, তা তাঁরা বলতে পারবেন না।
মমতার আহত হওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র, নাকি দুর্ঘটনা?
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে গোটা রাজ্যের ফলাফলের পাশাপাশি সকলের নজর থাকবে নন্দীগ্রামে। কারণ, পূর্ব মেদিনীপুরের এই কেন্দ্রে এবার সবচেয়ে হাইভোল্টেজ লড়াই। যে লড়াইয়ে একদিকে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি নিজের ভবানীপুর আসন ছেড়ে নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে বিরোধীদের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। আর তাঁর হেভিওয়েট প্রতিপক্ষ শুভেন্দু অধিকারী। যিনি এক সময় মমতার অন্যতম সেনাপতি ছিলেন আর এবার লড়াই করবেন বিজেপির টিকিটে। বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফের সংযুক্ত মোর্চা এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়কে।