কলকাতা: তিহাড়ে কেষ্ট, মদনের মুখে গুড়-বাতাসা! পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বঙ্গ রাজনীতিতে আবার গুড়-বাতাসা! এবার মদনের মুখে অনুব্রতর গুড়-বাতাসা তত্ত্ব। 'কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে ঝগড়া করবেন না। ওরা যদি খেতে চায় বাতাসা-জল দেবেন। ওরা ফিরে মোদিকে বলবে আমরা জল, গুড়ের নাড়ু দেব, কিন্তু বিজেপিকে ভোট দেব না'। জলপাইগুড়ির সভায় মন্তব্য মদন মিত্রের।


মাঝেমধ্যেই তাঁর গলায় শোনা যেত গর্জন। কখও চড়াম চড়াম, কখনও গুড় বাতাসার নিদান দিয়েছেন বীরভূমের কেষ্ট। কিন্তু এই পঞ্চায়েত ভোটের মুখে অনুব্রতহীন বীরভূম কার্যত ফাঁকা। এবার তাঁর সতীর্থ মদনের গলাতেই শোনা গেল এই সুর। বেশ কিছুদিন ধরে বারবার বিভিন্ন মন্তব্য করে সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছেন মদন মিত্র। কখনও বেসুরোও হয়েছেন তিনি। 


তদন্তের জাল: গরুপাচারকাণ্ডে আপাতত তিহাড় জেলে রয়েছেন অনুব্রত। গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর মেয়ে সুকন্যাও। গরুপাচারকাণ্ডে ধৃত তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনও। গরুপাচারকাণ্ডের তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে। খুব তাড়াতাড়ি ফাইনাল চার্জশিট দেওয়া হবে বলে সম্প্রতি আদালতে  দাবি করেছে সিবিআই। এর মধ্যেই অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের প্রায় ১ কোটির সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে আদালতে জানাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এদিনও প্রভাবশালী তত্ত্বে অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আর্জি খারিজ করলেন বিচারক। ৬ বছর চাকরি করে কি ৩৬ লক্ষ টাকার গয়না কেনা সম্ভব? গরুপাচারকাণ্ডে ধৃত সায়গল হোসেনের মামলার শুনানিতে বিস্মিত আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক। গোটা শরীরে যন্ত্রণা, শরীরে ব্যালেন্স পাচ্ছি না- জামিনের আর্জি জানিয়ে আদালতে বললেন অনুব্রত। তিহাড়ে গিয়ে অনুব্রত-সায়গলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই।


গরুপাচার মামলায় রাজ্যে সক্রিয় সিবিআই: কেন্দ্রীয় এজেন্সির নজরে কেষ্ট মণ্ডলের বিপুল সাম্রাজ্য। গতমাসে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ ও বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুৎবরণ গায়েনের বোলপুরের কালিকাপুরের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই অফিসাররা। গরু পাচার মামলায় আগেই বিদ্যুৎবরণের বিপুল সম্পত্তির হদিশ পায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সূত্রের খবর, সম্প্রতি বোলপুরে বিদ্যুৎবরণের আরও একটি সম্পত্তির হদিশ মেলে। এ দিন মিনিট পঁয়তাল্লিশ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অনুব্রত ঘনিষ্ঠকে।


এর পাশাপাশি, অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের গাড়ি চালক তুফান মিদ্যাকেও তলব করা হয়। সিবিআইয়ের দাবি, তুফানের নামেও বেশ কিছু সম্পত্তি রয়েছে। এইসব সম্পত্তি কীভাবে কেনা হল, টাকা কোথা এল, তা জানতে সুকন্যার গাড়ি চালকের কাছে নথি চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও, সিবিআইয়ের দাবি, অনুব্রতর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের বেশ কিছু নতুন অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে তারা। এইসব অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে সিবিআইয়ের দাবি।