কামারহাটি (উত্তর ২৪ পরগনা): দাদা জেলে। ভোট করাতে ভাই চলে এলেন বীরভূম থেকে! ভোটের দিন মদন মিত্রর নির্বাচনী কেন্দ্র দাপিয়ে বেড়ালেন বীরভূমের বিতর্কিত তৃণমূল নেতা আশিস দে!
কিন্তু, বীরভূমের আশিস তো উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটিতে বহিরাগত! তাতে অবশ্য কিছু এসে যায় না শাসক-নেতার!
বীরভূমের এই তৃণমূল নেতা বীরদর্পে জানালেন, সীতারাম-সিদ্ধার্থনাথ আসতে পারে দিল্লি থেকে! আর আমি পশ্চিমবঙ্গে থেকে ভোট করাতে পারি না?
কিন্তু, পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শাসক নেতার এই যুক্তি ধোপে টেকে না! কারণ, তিনি যাঁদের নাম করছেন, তাঁরা প্রচার করেছেন, চলেও গিয়েছেন! ভোটের দিন নিয়ম ভেঙে বাইরে থেকে কোনও জায়গায় গিয়ে ভোট করাচ্ছেন না! কিন্তু, আশিস কি আইনের ধার ধারেন? বিরোধীদের কটাক্ষ, কথা শুনে তো মোটেই মনে হয় না। তাই তো স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, মদন মিত্রর টানেই তাঁর বীরভূম থেকে কামারহাটিতে ছুটে আসা। বললেন, মদন দা ভাল লোক। মদনের জন্যই এসেছি। বুথে বুথে যাচ্ছি, ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছি।
যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, ‘ভোট-ম্যানেজ’ করার লক্ষ্যে অনুব্রত মণ্ডলের জেলার এই তৃণমূল নেতাকে যে কামারহাটিতে আনা হয়েছে, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। এই প্রসঙ্গে, কামারহাটিতে এসে করা আশিস দে-র সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যকে সামনে আনছে বিরোধীরা। যেখানে ঘুরিয়ে ভোটের দিন সন্ত্রাসের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল পরিচালিত পুর-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক! বলেছিলেন, যদি বলে, সন্ত্রাসের নির্বাচন হবে, তাহলে সন্ত্রাসের নির্বাচনই হবে।
এই হুমকির দেড় মাস কাটতে না কাটতেই ফের কামারহাটিতে আশিস! ভোটের দিন বুক ফুলিয়ে দিনভর চক্কর কাটলেন একাধিক বুথে। রীতিমতো ক্যাম্প করে ভোটারদের গ্লুকোজও খাওয়ালেন! কিন্তু, আজ যাঁর হাতে গ্লুকোজের কৌটো, ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর তাঁর হাতেই দেখা গিয়েছিল উদ্যত আগ্নেয়াস্ত্র! তৃণমূল নেতা আশিস দে-র তাণ্ডবের ছবি ধরা পড়েছিল বীরভূমের সিউড়ির একটি হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে! হাসপাতাল কর্মীদের হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি!
সংবাদমাধ্যমে সেই ছবি প্রকাশ পাওয়ার পর বাধ্য হয়ে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল আশিস দে-কে৷
কিন্তু, তারপর যে কে সেই! এবার বহিরাগত হয়েও কামারহাটিতে ভোট-তদারকি করলেন তিনি! বিষয়টি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছে সিপিএম।