এলাকা জুড়ে অচেনা মুখ। বহিরাগতদের দাপাদাপি। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। বুথ থেকে বের হলেই হুমকি। মারধর। মাত্র ৬ মাস আগের পুর-ভোট ঘিরে এমনই হিংসার সাক্ষী থেকেছে সল্টলেকবাসী। কিন্তু, এবারের ভোটে সল্টলেকে বেআইনি জমায়েত দেখা যায়নি। দেখা যায়নি বহিরাগতদের ভিড়। তেমন কোনও অশান্তির খবরও নেই। সল্টলেকে এবার সকাল সকাল ভোট।
যে ছবি দেখে অনেকেই বলছেন, দল বেঁধে প্রতিরোধ গড়ে তুললে যে ভোট লুঠ রোখা যায়, তা এবার দেখিয়ে দিল সল্টলেক! কিন্তু, কয়েকমাসের মধ্যে এই আমূল পরিবর্তন হল কীভাবে?
অনেকে বলছেন, পুরভোটের সময়ের এই সন্ত্রাসই একজোট করে দেয় গোটা সল্টলেককে। সেখানকার মানুষ শপথ নেয়, প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই হবে। সেই মতোই এবার সল্টলেকে নিজের ভোট নিজে। ভোট দিলেন সেই প্রবীণ ভোটারও, গত পুরভোটে যাঁকে রাস্তায় ফেলে, নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছিল। স্থানীয় ভোটার প্রীতিকুমার সেনের মতে, এভাবেই তো ভোট হওয়া উচিত। যাতে পুলিশ না লাগে। শুধুমাত্র প্রীতিকুমার সেনই নন! গোটা সল্টলেকজুড়েই এবার বদলের ছবি।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সল্টলেকে এবারের ভোট দেখিয়ে দিল, নির্বাচন কমিশন চাইলে বহিরাগতদের দাপট রুখে দিয়ে, ভয়মুক্ত পরিবেশে ভোট করাতে পারে। বিরোধীদের লাগাতার অভিযোগের মুখে এবার পঞ্চম দফা ভোটের জন্য কড়া পদক্ষেপ করে কমিশন। শুধুমাত্র সল্টলেকেই মোতায়েন করা হয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৫ হাজার ১০০ জওয়ান এবং রাজ্য পুলিশের ২২ হাজার কর্মী।
ভোটের আগে থেকেই এখানে মোড়ে মোড়ে শুরু হয়ে যায় তল্লাশি। গাড়ি থেকে বাস, কোনও কিছুকেই ছাড় দেওয়া হয়নি! এমনকী, ভোট চলাকালীন নিউটাউনে তো রীতিমতো ধাওয়া করে কুখ্যাত দুষ্কৃতী রমেশ মজুমদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ! বুথ চত্বরে ঘুরপাক খাচ্ছিল সে! বিরোধীদের প্রশ্ন, সল্টলেকে এ ভাবে ভোট করা গেলে, গোটা রাজ্যজুড়ে কেন করা যায় না?