কলকাতা: এলেন, ভোট দিলেন, আবার প্রশ্নের জবাবও দিলেন।
পরনে শ্বেতশুভ্র পোশাক। চোখে আত্মবিশ্বাস। ঠোটে হালকা হাসি। ভোট দিয়ে বেরলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য! এদিন দক্ষিণ বালিগঞ্জ কেন্দ্রে ভোট দেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
কিন্তু, আজ তাঁর ভোটের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব অন্য মাত্রায়। আজ বামপন্থী বুদ্ধদেব কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বী নন, তিনি দাঁড়িয়ে এক জোটসঙ্গী হিসেবে। তাঁর কেন্দ্র বালিগঞ্জে তো জোটের প্রার্থী কৃষ্ণা দেবনাথ। যাঁর প্রতীক হাত! সেই হাত, ভোট-যন্ত্রে যে চিহ্নের দিকে কখনও ভুলেও তাকাননি তিনি!
তবে, সে ইতিহাস অবশ্য এখন অতীতে বন্দি! ভোটের আকাশে আজ জোটের সূর্য! প্রতীক হাত হলেও, প্রার্থী জোটের। সিপিএমেরও! আর তাই, হাত-বোতামে চোখ রাখতে আজ আর নিষেধ নাই!
তবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অবশ্য নিয়ম ভাঙতে নারাজ। তাই, ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তাঁকে যখন প্রশ্ন করায় হয়, কাকে দিলেন ভোট? তখন বুদ্ধদেবের ছোট্ট উত্তর, ‘এটা সিক্রেট’!

পর্যবেক্ষকরা অবশ্য বলছেন, এই ‘সিক্রেট’ জানতে হ্যারি পটার হতে হবে না! এ তো এতদিনে এ বঙ্গের সব মানুষেরই জানা হয়ে গিয়েছে! গণতন্ত্রের রীতি মেনে ভোটযন্ত্রে নিজের পছন্দ গোপন রাখলেও, জোটের এই অন্যতম কাণ্ডারী কাকে ভোট দিয়ে বেরলেন, সেটা অনুমান করা বোধহয় খুব একটা কষ্টকর নয়!
কারণ, তিনিই তো এই জোটের অন্যতম কারিগর! নিচুতলার কর্মীদের জোটের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে কোনও চেষ্টাই তো বাকি রাখেননি তিনি! এমনকী, যাবতীয় ইতিহাসকে পিছনে ফেলে একই মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে। দলীয় সমর্থকদের উপহার দিয়েছেন ঐতিহাসিক মুহূর্ত!
শুধু তাই নয়! আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাহুল গাঁধীর সভামঞ্চে যখন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে প্রণাম করে আশীর্বাদ চান বালিগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী কৃষ্ণা দেবনাথ, তখন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তাঁদের বলেন, জীবনে প্রথম কংগ্রেসকে ভোট দেব! যাব ভোট দিতে। এর পরও কি আর ‘সিক্রেট’ সিক্রেট থাকে! তবে, নিয়ম যখন আছে, তখন তা মানাও উচিত। তাই, গোপন কথাটি আপাতত গোপনেই থাকুক!