কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, আশাবুল হোসেন ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা:  উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোট পড়ল প্রায় ৫৫ শতাংশ। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে ভোট পড়েছে এর থেকে অনেকটাই বেশি। 


বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ট্যুইট করে, ভবানীপুরের ভোটারদের উদ্দেশে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান তৃণমূল নেতারা। ভোটারদের বাড়িতেও পৌঁছে যান তৃণমূলকর্মীরা। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।


আদতে ভবানীপুরের ভোটের আঁচ সাধারণ নির্বাচনেরই চেয়েও বেশিই ছিল। দু’পক্ষই যুদ্ধং দেহী মনোভাবে ঝাঁপিয়েছে। একদিকে তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে বিজেপির ঝাঁঝালো প্রচার। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে মোদি সরকারের হেভিওয়েট মন্ত্রীরা। 


তৃণমূল নেত্রী প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন, 'আপনাদের প্রত্যেকটা ভোট গুরুত্বপূর্ণ। ১টা ভোট না পেলেও আমার ক্ষতি হয়ে যাবে। অনেকে ভাবছেন, দিদি এমনিই জিতে যাবেন। আবার বৃষ্টির মধ্যে ভোট দিতে যাব কেন। কিন্তু, দোহাই ওই কাজটি করবেন না। আপনাদের প্রতিটা ভোট আমার দরকার। ভোট না দিলে আমাকে পাবেন না। আমি না জিতলে তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী, অন্য কেউ হবে, আমি নয়।'


কিন্তু, ভবানীপুরে তৃণমূল-বিজেপির এই রণংদেহী মনোভাবের পরও, ভবানীপুরের ভোটাররা কিন্তু বাকি দু’জায়গার ভোটারদের মতো বুথমুখী হলেন না। ভবানীপুরের উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৫৫ শতাংশ। সেখানে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত সামশেরগঞ্জে ভোট পড়ল প্রায় ৭৯ শতাংশ আর জঙ্গিপুরে প্রায় ৭৬ শতাংশ। 


নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে ভবানীপুরে ৬৪ শতাংশ ভোট  পড়েছিল। সেবছরই উপনির্বাচনে পড়েছিল প্রায় ৪৫ শতাংশ ভোট। 


২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর কেন্দ্রে পড়েছিল প্রায় ৬৭ শতাংশ ভোট। এবার মাস পাঁচেক আগে বিধানসভা ভোটে, এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল প্রায় ৬২ শতাংশ। আর সেখানে বৃহস্পতিবার উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে বিকেল পাঁচটা অবধি ভোট পড়ল প্রায় ৫৩%।


সকাল এগারোটা অবধিও ভবানীপুরে ভোটদানের হার ছিল মাত্র ২২ শতাংশ। ভোট চলাকালীন একের পর এক তৃণমূল নেতা ট্যুইট করে ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়ার আর্জি জানান। 


পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ট্যুইট করেন, ভবানীপুরের প্রত্যেকের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, উন্নতির জন্য ভোট দিন, সমানাধিকারের জন্য ভোট দিন।


তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনও দিন ট্যুইট করেন, আর কয়েকঘণ্টা বাকি। আজ ভারতের দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হল। এতে শরিক হওয়ার সুযোগ হারাবেন না। ৩ অক্টোবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরাট ব্যবধানে জয়, বিজেপিকে নাড়িয়ে দেবে। 


ট্যুইট করেন মদন মিত্রও। তৃণমূলকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়ার আবেদন জানান। দুপুরের পর থেকে ভোটদানের হার অনেকটাই বাড়ে। আর ভোটদানের হার নিয়েও তৃণমূল-বিজেপির তরজা থেমে নেই। ভোট শেষ। এবার ফল জানতে অপেক্ষা আর দু’দিনের। 


আরও পড়ুন: ভবানীপুর কেন্দ্রে হ্যাম প্রার্থীর এজেন্ট তিনি, স্বীকার বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের, বিতর্ক


আরও পড়ুন: 'এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভোটারদের প্রভাবিত করেছে ফিরহাদ ও সুব্রত,' কমিশনে নালিশ বিজেপির