সমীরণ পাল, বনগাঁ: বনগাঁর বিজেপি নেতার বাস ভাঙার হুমকিকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি হিংসা ছড়াতে চাইছে বলে কটাক্ষ করল তৃণমূল কংগ্রেস। আর বাস বন্ধ থাকায় দিনভর ভোগান্তির শিকার হলেন সাধারণ যাত্রীরা।
ঠিক কী নিয়ে বিতর্ক? রবিবার ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনসভা ছিল। অভিযোগ, অগ্রিম ভাড়া দেওয়া সত্ত্বেও নরেন্দ্র মোদির ব্রিগেড সমাবেশে যাওয়ার জন্য বাস ভাড়া মেলেনি। তাই এবার বাস ভাঙচুরের হুমকি বিজেপি নেতার গলায়! আর যিনি হুমকি দিচ্ছেন, তিনি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি মনস্পতি দেব। তাঁর হুমকি দেওয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। আর মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়। যা ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।
বিজেপির দাবি, বনগাঁ-দক্ষিণেশ্বর DN 44 রুটের বাস সংগঠনের কাছ থেকে ব্রিগেডে যাওয়ার জন্য বাস চাওয়া হয়েছিল। তার জন্য অগ্রিম ভাড়াও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, শেষ পর্যন্ত বাস দিতে অস্বীকার করা হয়। এরই প্রতিবাদে বনগাঁর বাটার মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করে বিজেপি।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মনস্পতি দেব বলছেন, ‘‘যদি তৃণমূল বাস পায় আর আমরা না পাই, তাহলে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় একটা বাসও আস্ত থাকবে না ৷’’
শনিবার সন্ধেয় বনগাঁর মোতিগঞ্জ মোড়ে ব্রিগেড সমাবেশের সমর্থনে সভা ছিল বিজেপির। অভিযোগ, সেখানেই বাস ভাঙচুরের নির্দেশ দেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি। মনস্পতি মঞ্চে বলেন, ‘‘আমি কর্মীদের বলে দিতে চাই, যদি তৃণমূল বাস পায় আর বিজেপি না পায়, তাহলে ঝাণ্ডার তলার ডাণ্ডা খুলে মারুন। একটা বাসের উইন্ডস্ক্রিন যেন আস্ত না থাকে। মালিক সংগঠন ঠিক করবেন আপনাদের বাস সুস্থ রাখবেন কি না ৷’’
উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘গায়ের জোরে এসব করছে, বাস মালিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। এই কথা বলে হিংসা ছড়াতে চাইছে ৷’’
এদিকে, বিজেপির লোকজন বাস মালিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, এই অভিযোগে রবিবার DN 44 রুটের বাস পরিষেবা বন্ধ রাখল মালিক সংগঠন। বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশন, ডিএন ৪৪-এর সহ সভাপতি নারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘হেনস্থা করা হয়েছে, তাই বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷’
এদিকে বাস না পেয়ে নাজেহাল অবস্থা হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। রাজনৈতিক দলগুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে সাধারণ মানুষকে কেন ভোগান্তির শিকার হতে হবে, প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।