কলকাতা: বিধানসভা ভোটে বিজেপি পরাস্ত হওয়ার পরই শোভন-বৈশাখীর সুর বদল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা এবং বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূলে ফেরার জল্পনাও উস্কে দিয়েছেন তাঁরা।
ভোটে টিকিট না পেয়েই, বিজেপি নেতৃত্বের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন দু’জনে। বিজেপির ভরাডুবির পর শোভন-বৈশাখীর সুরে আমূল পরিবর্তন। নন্দীগ্রামের ফল নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন অভিযোগ করছেন, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, মমতার প্রতি কৃতজ্ঞতা, অভিনন্দন। বিজেপি নেত্রী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুর্ণিশ করি। হুইলচেয়ারে গিয়ে যেভাবে প্রচার করেছেন।
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সব জায়গায় এক ফল, আর একটা জায়গায় হঠাত্ ৮ হাজার থেকে ভোট নেমে হয়ে গেল জিরো। ৪ ঘণ্টা সার্ভার ডাউন করে রেখেছিল, তারপর ৪০ মিনিট লোডশেডিং। মেশিন পাল্টেছে।
এপ্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমারও একই সন্দেহ। আমি বলেওছিলাম। প্রথমে দেখা গেল মমতা জিতে গেল। তারপর হেরেছে। কনফিউশন রয়েই গেছে।
তাঁর মতোই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন, এখন তারও তীব্র সমালোচনা করেছেন শোভন। তিনি বলেন, লাগাতার কুৎসা। বেগম বলা। অশালীন কথা বলা। এসব ঠিক হয়নি। এর ফলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কার্যত কৃতজ্ঞতার সুর। বিজেপি নেত্রী বলেন, বিজেপির কাছে এতদিন শোভনের জন্য বলেও কিছু পাইনি। মমতা শোভনকে সিকিওরিটি দিয়ে জীবন রক্ষা করেছে।
শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্তূতি নয়, খারাপ ফলের পর বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে কার্যত তুলোধোনা করেছেন শোভন বৈশাখী। শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা যেভাবে কথা বলেছি, শোনাই হত না। রিপ্রেজেন্ট হয়নি। কলকাতার অবজার্ভার হয়েছে। সেই কলকাতায় তৃণমূল জিতেছে। এই পার্টি বুঝতেই পারেনি কী করতে হবে। বৈশাখীর কথায়, রাজ্য নেতৃত্ব উচ্চ নেতৃত্বকে মিস লিড করেছে। দল ছেড়ে এলেই প্রার্থী করেছে।
স্বভাবতই শোভন-বৈশাখীর এই সুরবদল দেখে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি তাঁরা তৃণমূলে ফিরতে পারেন? এই জল্পনা অবশ্য নতুন নয়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এরাজ্যে বিজেপি চমকপ্রদ ফল করার পরই দিল্লিতে সদর দফতরে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন-বৈশাখী। কিন্তু, দলে কখনওই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি তাঁদের। উল্টে কখনও ভাইফোঁটার দিনে শোভন-বৈশাখী পৌঁছে গেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। কখনও আবার কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সামনের সারিত বসে থাকতে দেখা গেছে শোভন-বৈশাখীকে।