পূর্ব বর্ধমান: দিনভর চলল হিংসা, হানাহানি, খুন। সন্ত্রাসের মধ্যে দিয়েই শেষ হল ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোট। ভোট শেষে কী বলছে পূর্ব বর্ধমানের সি ভোটারের সমীক্ষা? এই জেলা পরিষদে মোট আসন সংখ্যা ৬৬টি। সমীক্ষা বলছে সেখানে তৃণমূলের সম্ভাব্য ৪৩ থেকে ৫৩টি আসন পেতে পারে। বিজেপির ঝুলিতে থাকতে পারে ১১ থেকে ১৭টি আসন। বাম এবং কংগ্রেস পেতে পারে ১-৫টি আসন। 


ভোট পর্ব শেষে এবিপি আনন্দের সি ভোটার সমীক্ষা। কী বলছে ঝাড়গ্রামের পরিস্থিতি? ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদে মোট আসন সংখ্যা ১৯টি। ভোট শেষে সি ভোটার সমীক্ষা বলছে তৃণমূল এবারেও দৌড়ে এগিয়ে। শাসক দল পেতে পারে ১৩-১৭টি আসন। ঝাড়গ্রামে গেড়ুয়া শিবির ২-৬টি আসন পেতে পারে, বাম এবং কংগ্রেস পেতে পারে ০-১টি আসন। 


হিংসা, হানাহানি, গুলি, বোমা, মৃত্য়ু মিছিল দিয়ে শেষ হল ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ভোট। বিরোধীরা দাবি করছে, এটা ভোট নয়, ভোটের নামে প্রহসন। ভোটের ফলে আর যাই হোক, মানুষের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটবে না। উল্টোদিকে, তৃণমূলের দাবি, ২-১টি ঘটনাকে বড় করে দেখিয়ে নিজেদের ব্য়র্থতা লুকনোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা। তবে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্য়েই সম্ভাব্য় ফলাফলের একটা আঁচ পাওয়ার চেষ্টা করেছে সমীক্ষক সংস্থা সি ভোটার। 


আজ অর্থাৎ ভোটের দিন ২০টি জেলা পরিষদের ১৩ হাজার ২৮৯ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষকরা। বিকেল ৪টে পর্যন্ত করা সমীক্ষায় যা উঠেছে এসেছে, তার ভিত্তিতেই সার্ভের ফলাফল তুলে ধরেছে তারা। এই এক্সিট পোলে মার্জিন অফ এরর প্লাস মাইনাস পাঁচ শতাংশ।


কিন্তু ওপিনিয়ন পোল হোক কিংবা এক্সিট পোল, কোনওটাই শেষ কথা নয়! গণতন্ত্রে শেষ কথা হল মানুষ ব্য়ালট বক্সে কিংবা ভোটযন্ত্রে কী রায় দিয়েছে।সেটা একমাত্র তিনিই জানেন। সমপূর্ণভাবে যা গোপনীয়। আর তাই বাক্স কিংবা যন্ত্র খুললে তবেই বোঝা যায়, মানুষ কী চেয়েছে। এই এক্সিট পোলের সঙ্গে এবিপি আনন্দর এডিটোরিয়াল পলিসির কোনও সম্পর্ক নেই। আর মানুষ প্রকৃতভাবে তার মতামত দিতে পারল কি পারল না, তার উত্তর কি এই ছবিগুলোই নয়? সেই বিতর্ক কিন্তু রয়েই গেল।    


পূর্ববর্ধমান জুড়েও দেখা গেল হিংসার ছবি, কোথায় কী ঘটল, দেখে নিন এক ঝলকে


ব্যালটে জল ঢাললেন বিজেপি প্রার্থী : ছাপ্পার প্রতিবাদে ব্যালট বাক্সে জল ঢেলে দিলেন বিজেপির জেলা পরিষদের প্রার্থী শম্পা রায়। অভিযোগ, খাজুরডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের মণ্ডলহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৯ নম্বর বুথে তৃণমূল কর্মীরা ঢুকে ছাপ্পা দিতে শুরু করে। ছাপ্পা হয়ে যাওয়ার পর বিজেপির জেলা পরিষদের প্রার্থী শম্পা রায় ব্যালট বাক্সে জল ঢেলে প্রতিবাদ জানান। ছাপ্পার অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল প্রার্থীর দাবি, হারার ভয়ে বিজেপি প্রার্থী ব্যালটে জল ঢেলে দেন। 


তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে খুন : কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের শ্রীবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল প্রার্থীর বুথ এজেন্টকে পিটিয়ে খুন। নন্দীগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের ভিতর থেকে তৃণমূল প্রার্থীর এজেন্ট গৌতম রায়কে মারতে মারতে টেনে বের করে পিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের জেলা সভাপতির দাবি, সিপিএমের দুষকৃতীরা ওই বুথ এজেন্টকে পিটিয়ে মেরেছে। যদিও রাজ্য তৃণমূলের দাবি, এই মৃত্যুর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।


সিপিএম কর্মীর মৃত্যু: এবার পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে পঞ্চায়েত ভোট-সন্ত্রাসের বলি এক সিপিএম কর্মী। মৃতের নাম রাজিবুল হক। গতকাল আউশগ্রামের বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের সামনে তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। একে অপরকে লাঠি নিয়ে আক্রমণ করে। ঘটনায় জখম হন উভয়পক্ষের ৫ জন। গুরুতর আহত হন সিপিএম কর্মী রাজিবুল হক। রাতে এনআরএসে স্থানান্তরিত করার পর, আজ সকালে ওই সিপিএম কর্মীর মৃত্যু হয় বলে দলীয় সূত্রে খবর।