কলকাতা: ভোট শেষ। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে ভোট শেষের আধঘণ্টা পরে সামনে এল বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল। এবিপি সি ভোটারের সমীক্ষা সামনে আসতেই বড়সড় চমক। বাংলা নিয়ে বুথফেরত সমীক্ষায় আসন-জয়ের সম্ভাবনায় তৃণমূলকে পিছনে ফেলেছে বিজেপি।


কী রয়েছে এবিপি সি ভোটার বুথফেরত (ABP C Voter Exit Poll) সমীক্ষায়?


পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal Exit Poll) ৪২টা লোকসভা আসনের মধ্য়ে থেকে বিজেপি পেতে পারে ২৩-২৭টি আসন। তৃণমূলের দখলে আসতে পারে ১২-১৭টি আসন। বাম-কংগ্রেসের হাতে আসতে পারে ১-৩টি আসন। এমনটাই উঠে এসেছে এবিপি সি ভোটারের (ABP C Voter Exit Poll) বুথফেরত সমীক্ষায় (Exit Poll Live)


শুধু আসন সংখ্যার নিরিখেই নয়, ভোট শতাংশের বিচারেও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে পিছনে ফেলতে পারে বিরোধী দল বিজেপি। সি ভোটারের বুথ ফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত, এই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ঝুলিতে যেতে পারে ৪২.৫ শতাংশ ভোট, তৃণমূলের ঝুলিতে যেতে পারে ৪১.৫ শতাংশ ভোট, বাম ও কংগ্রেসের ঝুলিতে যেতে পারে ১৩.২ শতাংশ। অন্য়ান্যদের হাতে যেতে পারে ২.৮ শতাংশ। অর্থাৎ বিজেপি ১ শতাংশের মতো বেশি ভোট পেতে পারে তৃণমূলের তুলনায়। এমনটাই ইঙ্গিত মিলছে।


যদি বুথফেরত সমীক্ষা মিলে যায় তাহলে এটাই হতে পারে পশ্চিমবঙ্গের জন্য এখনও পর্যন্ত বিজেপির সবর্কালীন শ্রেষ্ঠ ফল। শেষ দফা নির্বাচনের আগে এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন, বাংলায় তাঁর দলের ফল সবচেয়ে ভাল হবে। তার আগে অমিত শাহ প্রচারে এসে ৩০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন। পরে এবং শেষ দফা ভোটের শেষে শুভেন্দু অধিকারী নির্দিষ্ট আসন সংখ্যা না বললেও বারবার দাবি করেছেন যে বাংলায় বিজেপির আসন সংখ্যা তৃণমূলের থেকে বেশি হবে। একই দাবি করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। বুথফেরত সমীক্ষায় এমনই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে আসন সংখ্যার নিরিখে বিজেপি তৃণমূলকে পিছনে ফেলতে পারে।  


যদিও এই বুথফেরত সমীক্ষাকে গুরুত্ব দিতে চায়নি তৃণমূল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ X হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লিখেছেন, 'বুথ ফেরত সমীক্ষার তথাকথিত রিপোর্টে বাস্তব প্রতিফলিত হয়নি। কিছুক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে অবাস্তব তথ্য ছড়ানো হয়েছে। গণনার দিন এজেন্টরা শেষ পর্যন্ত সক্রিয় থাকুন। মানুষ তৃণমূলকেই ভোট দিয়েছেন।' সঙ্গে তাঁর দাবি, বাংলায় তৃণমূল ৩০টার বেশি আসন পাবে।



সমীক্ষার খুঁটিনাটি:
১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন চলেছে সমীক্ষা। ৪৩১১৮২ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষকরা। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই ফল পাওয়া গিয়েছে। ৫৪৩ লোকসভা আসনেই এই সমীক্ষা হয়েছে।



এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপির ফলাফল এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ভাল। ওই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল ১৮ টি আসন। এবারে নির্বাচন শুরুর আগে সি ভোটার ওপিনিয়ন পোলে দেখা গিয়েছিল বিজেপি পেতে পারে ২০টি আসন। বুথফেরত সমীক্ষায় সেই আসন সংখ্যা বেড়েছে, দেখা যাচ্ছে বিজেপি পেতে পারে  ২৩-২৭টি আসন।


উল্টোদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ২২ টি আসন। এবারের সি ভোটার ওপিনিয়ন পোলে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল পেতে পারে ২০টি আসন। সেই সংখ্যা সি ভোটার এক্সিট পোলে আরও কমেছে। দেখা যাচ্ছে তৃণমূল পেতে পারে ১৩-১৭টি আসন।


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস পেয়েছিল ২ টি আসন। এবারের সি ভোটার ওপিনিয়ন পোলে দেখা গিয়েছিল কংগ্রেস পেতে পারে ২টি আসন। এরই মধ্যে রাজ্যে অধিকাংশ আসনেই বাম ও কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হয়েছে। ভোটের পরে বুথফেরত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বাম ও কংগ্রেস জোট পেতে পারে ১-৩টি আসন।


বুথফেরত সমীক্ষা কখনও একেবারে মিলে যায়। কখনও আবার ভুল প্রমাণিত হয়। 'ফিয়ার ফ্যাক্টর'-এর জন্য এই দেশে অনেকসময়েই বুথফেরত সমীক্ষা মেলে না। তাই এই সমীক্ষায় ফল যাই হোক না কেন তাকে ধ্রুবসত্য মনে করার কোনও কারণ নেই।


ডিসক্লেমার: সি ভোটারের এই সমীক্ষার সঙ্গে সম্পাদকীয় নীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সমীক্ষক সংস্থার দেওয়া তথ্যগুলো পাঠকদের সামনে তুলে ধরি মাত্র। বর্তমান সমীক্ষা ও তৎলব্ধ পূর্বাভাসটি সি ভোটার এক্সিট পোলের সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। রাজ্যভিত্তিক জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভার বিশ্লেষণ করা হয়েছে। 'এরর মার্জিন' বা ভুলের মাত্রা কম-বেশি ৫ শতাংশ পর্যন্ত গ্রাহ্য করা হয়েছে এবং ৯৫ শতাংশ কনফিডেন্স ইন্টারভ্যালে আমরা আমাদের ভোট শেয়ারের পূর্বাভাস দিয়েছি।


   


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: Loksabha Election 2024: ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা এড়াতে সিদ্ধান্ত, ফল ঘোষণার পরও রাজ্যে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী