কলকাতা: রাজ্য বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার চলছে জোরকদমে। আর কয়েকদিন পরেই প্রথম পর্বের ভোট। তার আগে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে জনমত নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করছে রাজনৈতিক দলগুলি। এই টক্করে জিত হাসিল কে করবে, তা জানা যাবে ২ মে। তার আগে আজ সিএনএস্কের তৃতীয় দফার সমীক্ষায় উঠে এল বিভিন্ন ধরনের ইঙ্গিত।


কয়েক মাস আগেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দু-দুটি সংস্থার সমীক্ষা  সামনে রাখার কথা দিয়েছিল এবিপি আনন্দ।  আজ  সিএনএক্সের তৃতীয় তথা শেষ দফার সমীক্ষা। আবারও বলে রাখা ভালো, এই সমীক্ষা দেখে কোনও উচ্ছ্বাস-হতাশা অর্থহীন, কারণ ভোটের হাওয়া যে কোনও সময়, যে কোনও দিকে বইতে পারে। এই সমীক্ষায় আমাদের জার্নালিস্টিক জাজমেন্ট বা এডিটোরিয়াল পলিসির কোনও জায়গা নেই। সিএনএক্সের তৃতীয় দফার এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে বারো থেকে একুশে মার্চ পর্যন্ত। ফোনে নয়, একেবারে ভোটারদের মুখোমুখি হয়ে, তাঁদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে। মার্জিন অফ এরর প্লাস-মাইনাস টু পয়েন্ট ফাইভ পার্সেন্ট।


CNX Opinion Poll 2021: কে পাবে কটা আসন? সরকার গড়বে কে? কী ইঙ্গিত CNX-এর তৃতীয় দফার সমীক্ষায়


এবারের ভোটে বাঙালি আবেগ টানতে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগান তুলেছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির বিরুদ্ধে বহিরাগত তত্ত্ব তুলেছে তারা। এই অবস্থায় সিএনএস্কের তৃতীয় দফার সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল,  ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’--- এই স্লোগান কি বাঙালি আবেগ উস্কে দিয়ে তৃণমূলকে ভোট টানতে সাহায্য করবে?


এর উত্তরে ৩৭ শতাংশ বলেছেন হ্যাঁ। না বলেছেন ৩৭ শতাংশ। বলতে পারব না বলেছেন ২৬ শতাংশ।


ভোটের আগে তদন্তে কয়লা পাচার সংক্রান্ত মামলার তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এই ঘটনা নিয়েও ভোটের প্রচারে আবেগ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসভায় বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন,‘ঘরের মেয়ে-বউদের কয়লা চোর বলছে’।


সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল,  ‘ঘরের মেয়ে-বউদের কয়লা চোর বলছে’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে কি তৃণমূল ভোটে লাভবান হবে?


এর উত্তরে ৩৮ শতাংশ মনে করছেন তৃণমূল লাভবান হবে। না বলেছেন ৪৬ শতাংশ। বলতে পারব না – ১৬ শতাংশ।


সিএনএক্সের সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল, পেট্রোল-ডিজেল-রান্নার গ্যাসের রেকর্ড দাম বৃদ্ধি কি বিধানসভা ভোটে বিজেপির ক্ষতি করবে?


এর উত্তরে হ্যাঁ  বলেছেন ৫৬ শতাংশ।  না বলেছেন ৩৫ শতাংশ। বলতে পারব না , বলেছেন ৯ শতাংশ।


সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল,  দুর্গাপুজো-সরস্বতী পুজো-মহরমের প্রসঙ্গ বারবার তুলে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগে সরব বিজেপি। এর লাভ কি ভোটে বিজেপি পাবে?


এর উত্তরে হ্যাঁ বলেছেন ৩৭ শতাংশ। না বলেছেন ৪১ শতাংশ। বলতে পারব না বলেছেন ২২ শতাংশ।


সমীক্ষায় প্রশ্ন ছিল-বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের দাবি, জয় শ্রীরাম স্লোগান তৃণমূলের তোষণের রাজনীতির বিরোধিতার প্রতীক। আপনি সমর্থন করেন?


সমর্থন করি,  বলেছেন ৩৮ শতাংশ। সমর্থন করি না, বলছেন ৪৩ শতাংশ। বলতে পারব না – বলেছেন ১৯ শতাংশ।


নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনা ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। এই প্রসঙ্গে সমীক্ষায় প্রশ্ন ছিল- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, নন্দীগ্রামে চক্রান্ত করে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, মমতা সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। কার দাবি সঠিক বলে মনে করেন?


 


উত্তরে ৪১ শতাংশ বলছেন, মমতার দাবি সঠিক।


বিরোধীদের দাবি সঠিক, বলছেন ৪২ শতাংশ। 


বলতে পারব না – বলছেন ১৭ শতাংশ।


বিজেপির দাবি, সিবিআই তদন্ত করে দেখুক, নন্দীগ্রামে কী হয়েছে। আপনি কি একমত?


সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত – বলেছেন ৪৯ শতাংশ।


সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত নয় – বলছেন ৩২ শতাংশ।


বলতে পারব না –বলেছেন ১৯ শতাংশ।


সমীক্ষায় আরও প্রশ্ন ছিল, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনায় কে লাভবান হবে বলে মনে করেন?


উত্তরে ৪৫ শতাংশ বলছেন, তৃণমূল।


বিজেপি, বলছেন  ৪০ শতাংশ।


বলতে পারব না – বলেছেন ১৫ শতাংশ।