সুনীত হালদার,হাওড়া: হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রে (Howrah sadar lok sabha constituency) বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী (Left-congress alliance candidate) হিসেবে লড়ছেন আইনজীবী ও সিপিএম (CPI(M) নেতা সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। ভোট প্রচারে তিনি পুরোদস্তুর নেমে পড়লেও এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে কোনও দেওয়াল লিখন বা সমন্বয় বৈঠক হয়নি। এতে কার্যত দিশাহারা কংগ্রেস কর্মীরা। কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত যৌথ প্রচারে তাদের ডাকা হয়নি। এতে তারা আশাহত। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) এই জোটকে কোনও গুরুত্ব দিতে চাইনি।
গত ১০ মার্চ ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস হাওড়া সদর কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে তিনবারের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করে। এর কিছুদিন পরে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়কে হাওড়া সদর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই সময় নষ্ট না করে সিপিএম কর্মীরা হাওড়া শহর জুড়ে প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার শুরু করেন।
দেওয়াল লিখনের পাশাপাশি হাওড়া সদর কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভা এলাকায় ছোট ছোট মিছিল এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার কাজ চালাচ্ছেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। কেন্দ্রীয় এবং রাজস্তরে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে সিপিএম জোট নিয়ে বেশ কয়েক দফা আলোচনার পর হাওড়া সদর আসনটি সিপিএমকে দেওয়া হয়। কিন্তু হাওড়া জেলার কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, গত ২ সপ্তাহের বেশি সময় সিপিএম একা একাই প্রচার করছে। মিছিল বা মিটিংয়ে তাদের ডাকা হয়নি।
এমনকী প্রার্থীর সমর্থনে যে দেওয়াল লেখা হয়েছে তাতে কোথাও ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী অথবা কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে লেখা হয়নি। এই ঘটনায় কংগ্রেসের বুথ লেভেলের কর্মীরা আশাহত এবং দিশাহারা। তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না এই মুহূর্তে কী করা উচিত। তবে শেষ পর্যন্ত তারা সিপিএমের সঙ্গে প্রচার কাজে সামিল হবেন কিনা তা নির্ভর করছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের নির্দেশের ওপর।
বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এই নিয়ে মুখ খুলেছেন সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "তাঁর সঙ্গে কংগ্রেস নেতা এবং কর্মীদের কথা হয়েছে। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে তাদের সমর্থন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা চাইব কংগ্রেস কর্মীরা এই লড়াইয়ে আমাদের পাশে থাকবেন। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য এই জোটকে কোন গুরুত্ব দিতে নারাজ।"
হাওড়া সদর কেন্দ্রের লোকসভা ভোটের নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান এবং রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, "বিজেপি এবং সিপিএমের মধ্যে লড়াই হচ্ছে কে দ্বিতীয় বা তৃতীয় হবে তা নিয়ে। গত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের ভোট বিজেপিতে গিয়েছিল। এবার যদি সিপিএম তাদের ভোট ধরে রাখতে পারে তবে তাদের লাভ।"
সেই সঙ্গে আরও বলেন জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস কর্মীদের তিনি শ্রদ্ধা করেন। তিনি তাঁদের আহ্বান জানাচ্ছেন, ভোট সিপিএমে না দিয়ে তাঁরা যেন তৃণমূল কংগ্রেসকে দেয়। কারণ বিজেপির বিরুদ্ধে তারাই লড়াই করছেন। তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস যদি সিপিএমের হাত ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে তবে এখানে ওই দল নিজের পায়ে লড়ে শক্তিশালী হতে পারে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হাওড়ায় ভোট ২০ মে। ফলে হাতে বেশ কিছুটা সময় আছে। এখন দেখার ভোটের আগে কাজিয়া ভুলে সিপিএম এবং কংগ্রেস কতটা ঘর গোছাতে পারে?