নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। চালু হয়ে গিয়েছে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধিও। তার পরও বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির প্রচারে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে লাগাতার অভিযোগ করছিলেন বিরোধীরা। এবার সেই নিয়ে সক্রিয় হল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় সরকারের 'বিকশিত ভারত সম্পর্ক' হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট থেকে নাগরিকদের কোনও মেসেজ পাঠানো যাবে না বলে জানাল তারা। (Election Commission)


বৃহস্পতিবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়। কমিশন জানায়, 'বিকশিত ভারত সম্পর্ক' অ্যাকাউন্ট থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামাঙ্কিত চিঠি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রাহকদের  পাঠানো যাবে না। অবিলম্বে ওই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। কমিশনের নির্দেশানুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে চিঠিতে জবাবও দিতে হবে কেন্দ্রকে। (Lok Sabha Elections 2024)


কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিল তারা। কেন্দ্র যদিও জানিয়েছে, নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি চালু হওয়ার আগেই ওই চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু প্রযুক্তিগত খামতির জেরে কিছু চিঠি দেরিতে গিয়ে পৌঁছেছে। নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগে, ১৫ মার্চ চিঠিগুলি পাঠানো হয় বলে কমিশনকে জানিয়েছে কেন্দ্র। যদিও এখনও বহু মানুষের হোয়াটসঅ্যাপে ওই মেসেজ ঢুকছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে, তাতেই কেন্দ্রকে চিঠি দিল কমিশন। 




ওই চিঠিতে লেখা হয়, 'নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি চালু রয়েছে। এই সময়কালে এই ধরনের কোনও চিঠি হোয়াটসঅ্যাপে না পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কমিশনের নির্দেশ মেনে পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে অবিলম্বে চিঠি দিয়ে জানাতে হবে কেন্দ্রকে'।


আরও পড়ুন: Election Commissioners Appointment: নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে স্বচ্ছতা কই? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের, নোটিস দিয়ে জবাব তলব কেন্দ্রের


লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের নাগরিকরা তো বটেই, বিদেশি নাগরিকদের কাছেও মোদির নামে 'বিকশিত ভারত সম্পর্ক' চিঠি পৌঁছেছে। সরকারি নিয়ম-নীতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। ভারতীয়রা তা বটেই, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ব্রিটেন, এমনকি পাকিস্তানি নাগরিকদের কাছেও ওই চিঠি পৌঁছেছে বলে গত কয়েকদিনে একধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। 


কংগ্রেস এবং তৃণমূলও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়। নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি চালু হওয়ার পরও সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে বিজেপি-র প্রচার চলছে বলে অভিযোগ করে কংগ্রেস। গত ১৮ মার্চ বিষয়টি নিয়ে সরব হয় তৃণমূলও। দলের সাংসদ সাকেত গোখলে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সচিব এস কৃষ্ণণকে চিঠিও লেখেন।  কোথা থেকে তথ্য জোগাড় করে ভারতের বাইরেও চিঠি পাঠানো হল, জানতে চান তিনি। 


সোশ্যাল মিডিয়ায় সাকেত লেখেন, 'মেসেজে প্রধানমন্ত্রীর একটি চিঠিও রয়েছে, যা প্রোপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই নয়। মোদি এবং বিজেপি-র জন্য প্রচার। ১৬ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টের পরও ওই মেসেজ পেয়েছেন বহু মানুষ, ঠিক যে সময় থেকে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হয়'। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রকে চিঠি পাঠানো বন্ধ করতে বলল কমিশন।