নয়াদিল্লি: নির্বাচনী বন্ড থেকে কত চাঁদা পেয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি, সেই সংক্রান্ত অতিরিক্ত তথ্য প্রকাশ করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিলের আগে নির্বাচনী বন্ড থেকে কত চাঁদা যায় রাজনৈতিক দলগুলির কাছে, সেই তথ্য এবার সামনে আনল তারা। ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিলের পর থেকে যত চাঁদা জমা পড়েছিল, সেই তথ্য আগেই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে কমিশন (Election Commission)। নয়া যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে রাজনৈতিক দলগুলিই বন্ধ খামে ভরে সেগুলি জমা দিয়েছিল। (Electoral Bonds Data)
- কমিশন প্রকাশিত নয়া তথ্য অনুযায়ী-
- বন্ড ভাঙিয়ে ৬, ৯৮৬.৫ কোটি টাকা চাঁদা তোলে বিজেপি, এর মধ্যে ২০১৯-’২০ সালেই ২, ৫৫৫ কোটি টাকা তাদের ঝুলিতে ঢোকে।
- তালিকায় বিজেপি-র পরই রয়েছে তৃণমূল। নির্বাচনী বন্ড ভাঙিয়ে ১,৩৯৭ কোটি টাকা ঘরে তুলেছে তারা।
- নির্বাচনী বন্ড ভাঙিয়ে কংগ্রেস ১,৩৩৪.৩৫ কোটি টাকা ঘরে তুলেছে।
- YSR কংগ্রেস কংগ্রেস নির্বাচনী বন্ড থেকে চাঁদা পেয়েছে ৪৪২.৮ কোটি টাকা।
- TDP নির্বাচনী বন্ড ভাঙিয়ে ১৮১.৩৫ কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছে।
- DKM নির্বাচনী বন্ড থেকে ৬৫৬.৫ কোটি টাকা চাঁদা পায়, এর মধ্যে ৫০৯ কোটি টাকা দেয় লটারি কিং সান্টিয়াগোর ফিউচার গেমিংস সংস্থা। অর্থাৎ DMK-র মোট আয়ের ৮৩ শতাংশই নির্বাচনী বন্ড থেকে প্রাপ্ত।
- ওড়িশার বিজু জনতা দল নির্বাচনী বন্ড থেকে ৯৪৪.৫ কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছে।
বিশদ দেখুন: Details of Electoral Bonds as received in digitised form from Supreme Court Registry
- কেসিআর-এর ভারত রাষ্ট্র সমিতি নির্বাচনী বন্ড থেকে চাঁদা পেয়েছে ১৩২২ কোটি টাকা।
- সমাজবাদী পার্টি চাঁদা পেয়েছে ১৪.০৫ কোটি টাকা, অকালি দল ৭.২৬ কোটি টাকা, AIADMK ৬.০৫ কোটি, ন্যাশনাল কনফারেন্স পেয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা। AIMIM নির্বাচনী বন্ড মারফত চাঁদা পায়নি।
- শিবসেনা নির্বাচনী বন্ড ভাঙিয়ে ৬০.৪ কোটি টাকা তোলে। রাষ্ট্রীয় জনতা দল তোলে ৫৬ কোটি টাকা।
- জনতা দল সেক্যুলার নির্বাচনী বন্ড থেকে ৮৯.৭৫ কোটি টাকা পেয়েছে, যার মধ্যে ৫০ কোটি টাকা দিয়েছে মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং, যে সংস্থা নির্বাচনী বন্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা।
- সবচেয়ে বেশি নির্বাচনী বন্ড কিনেছে ফিউচার গেমিং, ১৩৬৮ কোটি টাকার, যার ৩৭ শতাংশ DMK-র ঝুলিতে গিয়েছে।
নয়া যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের তরফে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত ওই অতিরিক্ত তথ্য ফেরত দেওয়া হয়েছে। কাগজ লেখা হিসেবপত্রের পাশাপাশি, পেনড্রাইভেও সমস্ত তথ্য বন্ধ খামে ভরে হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আদালতের রেজিস্ট্রি থেকে পাওয়া তথ্য ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হল। শনিবারই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে কমিশন। সোমবারই নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত অতিরিক্ত ওই তথ্য প্রকাশ করা হল।
নয়া যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বন্ড কেনা, ভাঙানোর তারিখ, টাকার অঙ্ক, বন্ডের নম্বর, স্টেট ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার কোন শাখা থেকে সেগুলি বিক্রি হয়েছিল, সেই সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। তবে প্রত্যেকটি বন্ডের যে আলাদা ক্রমিক সংখ্যা থাকে, তা খোলসা করা হয়নি। তৃণমূলের তরফে সেই নিয়ে SBI-কে চিঠি দেওয়া হয়েছিল আগেই। বিজেপি-র তরফে তেমন কোনও অনুরোধ জানানো হয়নি বলে খবর।
মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি জানিয়েছে, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোনও চাঁদা পায়নি তাঁর দল। CPI এবং CPM-ও জানিয়েছে, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে চাঁদা আসেনি তাদের কাছে। কংগ্রেসের গোয়া প্রদেশ শাখা জানিয়েছে, তারা ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা পেয়েছে বন্ডের মাধ্যমে। ত্রিপুরা বিজেপি এবং পশ্চিমবঙ্গ NCP জানিয়েছে, তারা বন্ডের মাধ্যমে কোনও চাঁদা পায়নি।