নয়াদিল্লি: নির্বাচনী রাজনীতিতে নগদের জোগান একধাক্কায় ৮৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২-’২৩ সালে ১১ রাজ্যের নির্বাচনে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা উদ্ধার হয় বলে জানাল কমিশন। লোকসভা নির্বাচনের আগে তাই নির্বাচনী রাজনীতিতে বেআইনি অর্থের জোগানে রাশ টানতে উদ্যোগী হল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তাদের দাবি, অবাধ এবং সুষ্ঠ নির্বাচনের পথে অর্থ অন্যতম প্রতিবন্ধকতা অর্থ। (Money Power in Elections)


শনিবার লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, ২০২২-'২৩ সালে ১১ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের সময় নগদ ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়, যা আগের তুলনায় ৮৩৫ শতাংশ বেশি (Lok Sabha Elections 2024)। কমিশন প্রদত্ত তথ্য অনুয়ায়ী-



  • ২০১৭-১৮ বর্ষের তুলনায় ২০২২-২৩ বর্ষে ১১ রাজ্যের নির্বাচনে নগদে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়, যা আগের তুলনায় ৮৩৫ শতাংশ বেশি।

  • এর মধ্যে রাজস্থান থেকে উদ্ধার হয় ৭০৪ কোটি টাকা। তেলঙ্গানা থেকে ৭৭৮ কোটি, গুজরাত থেকে ৮০২ কোটি, ত্রিপুরা থেকে ৪৫ কোটি, ছত্তীসগঢ় থেকে ৭৮ কোটি টাকা উদ্ধার হয়।

  • মেঘালয় থেকে ৭৪ কোটি, কর্নাটক থেকে ৩৮৪ কোটি, মিজোরাম থেকে ১২৩ কোটি, হিমাচলপ্রদেশ থেকে ৫৭ কোটি, মধ্যপ্রদেশ থেকে ৩৩২ কোটি, নাগাল্যান্ড থেকে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়।


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee Attacks BJP: 'তৃণমূলের উচ্ছিষ্টদের নিয়ে প্রার্থী করার অপেক্ষায়', বিজেপিকে খোঁচা অভিষেকের


ভারতীয় নির্বাচনে অর্থই যে নির্ধারকের ভূমিকা পালন করে, এই ধারণায় অধিকাংশেরই। অতি সম্প্রতি নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য সামনে আসার পর, প্রমাণস্বরূপ রাজনৈতিক দলগুলির প্রাপ্ত চাঁদার পরিমাণও উল্লেখ আসছে। কারণ নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্যে দেখা গিয়েছে, কারণ BJP একাই ৬ হাজার ৬১ কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছে। তৃণমূল ১ হাজার ৬১০ কোটি এবং কংগ্রেস ১ হাজার ৪২২ কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছে কর্পোরেট সংস্থা, শিল্পপতি, ব্যক্তি-বিশেষের কাছ থেকে। (Election Commission)


যে দলের হাতে টাকা বেশি, প্রচারে তারা যে এগিয়ে থাকবে, বাকিরা যে পিছিয়ে পড়বে, সেকথা বলা বাহুল্য। অর্থের জোরে নির্বাচনী ময়দানে আধিপত্য রুখতে কিছু পদক্ষেপের কথা বলেছে কমিশন। তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে তাদের নির্দেশ-



  • মদবিক্রি, মাদকবিক্রি এবং জনকল্যাণের নামে হাতবদল হওয়া নগদ টাকার লেনদেনে নজর রাখতে হবে।

  • বেআইনি লেনদেনের মাথাকে খুঁজে বের করতে হবে।

  • মদ বা উপহারের মাধ্যমে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা রুখতে হবে।

  • বেআইনি ভাবে অনলাইন মাধ্যমে যে সব লেনদেন হয়, তার উপরও চাই নজরদারি।

  • সূর্যাস্তের পর ব্যাঙ্কের গাড়ি টাকা নিয়ে বেরোতে পারবে না।

  • হঠাৎ হঠাৎ চার্টার্ড বিমানের আনাগোনার উপর নজরদারি চালাতে হবে।

  • নগদ, মদ, এবং মাদকের জোগান কোন পথে, জানতে হবে।

  • কখন, কোথায়, কী বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তার প্রতি মুহূর্তের আপডেট রাখা দরকার। পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলতে হবে তদন্তকারীদের।  


এ ব্যাপারে নাগরিকদেরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানিয়েছে কমিশন। কোথাও চাকার লেনদেন বা সন্দেহজনক লেনদেন চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে জানাতে বলা হয়েছে। cVigil-এর মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে পারেন নাগরিকরা।