রুমা পাল, কলকাতা: 'যাঁরা পঞ্চায়েতে (Panchayat Election 2023) জয়ী, তাঁদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) রায়ের ওপর', সমস্ত জেলাশাসকদের (DM) চিঠি দিয়ে জানাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন (West Bengal State Election Commission)। এও লেখা, 'সমস্ত জয়ী প্রার্থীকে দ্রুত কমিশনের নোটিস সম্বন্ধে অবহিত করতে হবে জেলাশাসকদের।'
কী বলছে কমিশন?
পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত একাধিক মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। তার মধ্যে, একটি মামলায়, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আগেই মন্তব্য করেছিল, জয়ী প্রার্থীদের মনে রাখতে হবে যে তাঁদের ভবিষ্যৎ সংশ্লিষ্ট মামলার উপর নির্ভর করছে। সেই সূত্রেই আরও বলা হয়েছিল, পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় নথি, সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। ঘটনা হল, মনোনয়ন পর্ব থেকে ভোটগ্রহণের নানা পর্বে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। সেই সমস্ত অভিযোগই হাইকোর্টে বিচারাধীন। এবার সেই মামলার রায়ে কী বেরোয়, তার উপরই নির্ভর করবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ। রাজ্য নির্বাচন কমিশন এই বিষয়টিই একেবারে চিঠি দিয়ে সমস্ত জেলাশাসকদের জানিয়েছে। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, যে সংশ্লিষ্ট জেলার প্রত্যেক জয়ী প্রার্থীকে যেন কমিশনের নোটিস সম্পর্কে অবিলম্বে জানানো হয়।
প্রেক্ষাপট...
পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রথমে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। ভিডিও রেকর্ডিংও জমা দেওয়া হয়, দাবি জানানো হয় কয়েক হাজার বুথে পুনর্নির্বাচনের। বরং যে কয়টি বুথে নতুন করে ভোটগ্রহণ হয়েছে, সেগুলি তাদের তালিকাতেই ছিল না বলে দাবি করে বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে তাই সটান হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী। সেই মামলাতেই গত বুধবার কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা করল আদালত।
প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার শুনানি চলছিল। সেখানে কমিশনের তরফে আজও কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তাতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, "আজও কমিশনের কেউ আদালতে নেই, তারা কেন সক্রিয় নয়? পুনরায় নির্বাচনের জন্য কমিশনের কাছে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী কী সিদ্ধান্ত তা জানানো উচিত ছিল। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে ফল ঘোষণার পরও রাজ্যে অশান্তি আটকাতে পারছে না কমিশন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।"আদালত আরও জানায়, ভোটের মনোনয়ন থেকে গণনা, ৩৫ দিনে ভোট সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন ৪৫ জন। খুব দুঃখের যে, ফল ঘোষণার পরে রাজ্য অশান্তি আটকাতে পারছে না।' কমিশনের উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে এর পরই প্রধান বিচারপতি বলেন, "যদি রাজ্য তার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে সেটা উদ্বেগের। এই মামলার ভবিষ্যতের উপর বিজয়ী প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ভর করবে। কমিশনকে সেটা মাথায় রাখতে হবে। নির্বাচন সংক্রান্ত সব নথি, সিসিটিভি ফুটেজ, ব্যালট, তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে কমিশনকে।"
এর পর, আজ জেলাশাসকদের চিঠি পাঠাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন:লোকসভায় আসন বাড়ানোই লক্ষ্য, শাহি-সাক্ষাতের পর বললেন সুকান্ত, অগাস্টে বাংলা সফরে শাহ