কলকাতা : একসময় জেলায় সংগঠন সামলেছেন। তাঁর কথাই 'শেষ কথা ছিল' বীরভূমে। তাঁর প্রতি ভরসাও করতেন দলনেত্রী। প্রার্থী যে-ই হোক, তাঁকে জেতানোর কোনও খামতি রাখতেন না অনুব্রত মণ্ডল। সাংগঠনিকভাবে সব দায়িত্ব সামলাতে পিছপা হতেন না। এহেন 'কেষ্ট' আজ তিহার জেলে বন্দি। বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে এই জেলায় তৃণমূল জয়ের ধারা হয়তো বজায় রেখেছে, কিন্তু কেষ্ট-হীন বীরভূমে এবার লোকসভা ভোটে লড়াইয়ে নামছে তৃণমূল। কাজেই লড়াই কতটা কঠিন হবে ? কী ভাবছেন পুনরায় বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে টিকিট পাওয়া শতাব্দী রায় ?  


প্রশ্ন : এবারের ভোটটা কি আর পাঁচটা ভোটের থেকে কঠিন ? কারণ, জেলবন্দি রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। সন্দেশখালির মতো ঘটনা। বারেবারে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী । তিনি দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূলকে আক্রমণ করছেন। এবারের চ্যালেঞ্জটা কি একটু হলেও কঠিন ?


এই প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রতর কোনও নাম না করে শতাব্দী বললেন, "প্রধানমন্ত্রী আগেও ভোটে এসেছেন। আমরা বলতাম, ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করছেন। এটা আর একটু আগে থেকে শুরু করেছেন। কারণ, যত ভরসা-কনফিডেন্স কমছে তত বেশি আসা-যাওয়া শুরু করবেন। তাতে কিছু প্রভাব পড়েনি। প্রত্যেকবারই হাওয়া ওঠে,  এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল আর থাকল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হারলেন। কিন্তু, প্রত্যেকবার তার থেকে বেশি ভোটে জয়ী হয়। মানুষ প্রত্যেকবার এই ভুল বার্তা ভোটবাক্সে গিয়ে জবাব দেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি এখনও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ অটল রয়েছেন। "    


পুনরায় তাঁকে দল টিকিট দেওয়া প্রসঙ্গে শতাব্দী বলেন, "দিদিকে-অভিষেককে ধন্যবাদ । আমার ওপর আবার ভরসা রেখেছেন। বীরভূমের মানুষের প্রতিও আমি বারবার কৃতজ্ঞতা দেখিয়েছি এবং জানিয়েছি। তাঁরা আমাকে সুযোগ দেন কাজ করার জন্য এবং আমিও কাজ করি। ভালবাসা নষ্ট করার মতো কোনও কাজ আমি করিনি। ওঁদের সেই ভালবাসা অটুট আছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এত কাজ করেছেন, সেই পরিষেবা মানুষ এত পেয়েছেন যে মানুষ সেটা ভুলবেন না। ভোটের সময় আমরা জিতব।"  


প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) ২০২২ সালের ১১ অগাস্ট অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) গ্রেফতার করে সিবিআই (CBI)। এরপর আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইনে ইডির (Enforcement Directorate) দায়ের করা মামলায় ২০২২-এর ১৭ নভেম্বর থেকে জেলবন্দি বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি। বর্তমানে তিনি দিল্লির তিহার জেলে রয়েছেন। এত কিছুর পরেও বীরভূমের জেলা সভাপতির পদ থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে সরায়নি তৃণমূল।