নয়াদিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের ভোটপর্ব শুরুর প্রাক্কালে ফেসবুক এমন ৬৮৭টি পেজ, অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানাল, যেগুলির সঙ্গে যোগ আছে কংগ্রেসের একটি তথ্য প্রযুক্তি সেলের লোকজনের।
ফেসবুক বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েছে তার ব্যবহারকারীদের তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য। ভারতে নির্বাচনের মুখে ভুল তথ্য, বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধে হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম সহ তাদের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার না হওয়া সুনিশ্চিত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে ফেসবুক। স্বচ্ছতা বাড়াতে সম্প্রতি তারা নিজেদের প্ল্যাটফর্মে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের যাবতীয় তথ্য দেওয়া শুরু করেছে। এছাড়া ফেসবুক তথ্য যাচাই করে দেখার টিমকে শক্তিশালী করছে। ভুয়ো খবর বন্ধে প্রযুক্তি, কৌশলও কাজে লাগাচ্ছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সব সোস্যাল মিডিয়াকে সাবধান করে বলা হয়েছে, অবাঞ্ছিত পদ্ধতির মাধ্যমে দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কলকাঠি নাড়ানো, প্রভাব খাটানোর চেষ্টা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুয়ো অ্যাকাউন্ট ও স্প্যাম বা অপ্রাসঙ্গিক বার্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে ফেসবুক।


সোস্যাল মিডিয়ার এই জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মের সাইবার সিকিউরিটি পলিসি সংক্রান্ত প্রধান নাথানিয়েল গ্লেচার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ফেসবুক ৬৮৭টি পেজ ও অ্যাকাউন্ট সরিয়ে দিয়েছে। এগুলির অধিকাংশকেই ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করে অটোমেটেড সিস্টেমসের মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে। ওই পেজ ও অ্যাকাউন্টগুলি ভারতে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্যতাহীন আচরণ করছিল। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের একটি আইটি সেলের সঙ্গে যুক্ত লোকজনের সঙ্গে যোগ রয়েছে এগুলির। এই নেটওয়ার্কগুলির কোনও একটিকে যখন আমরা বাদ দিই, তার কারণ তাদের অস্বাভাবিক আচরণ। তারা নিজেদের পরিচয় আড়াল করতে ভুয়ো অ্যাকাউন্টের নেটওয়ার্ক কাজে লাগায়, পিছনে কারা আছে, সে ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়ায়। সেটাই বন্ধ করার মূল কারণ। এই পেজ ও গ্রুপগুলির শেয়ার করা কনটেন্টের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। বলেন, আমরা অস্বাভাবিক, বিশ্বাসযোগ্যতাহীন আচরণ চিহ্নিত, বন্ধ করতে লাগাতার চেষ্টা করছি। কারণ জনসাধারণকে প্রভাবিত করতে আমাদের পরিষেবা কাজে লাগাতে দিতে চাই না আমরা। এইসব পেজ, অ্যাকাউন্টগুলি সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ওদের আচরণের ভিত্তিতে, ওদের পোস্ট করা কনটেন্টের জন্য নয়। পাশাপাশি পাকিস্তানে তৈরি একটি নেটওয়ার্কের অঙ্গ হিসাবে একই আচরণ করায় ফেসবুক তাদের প্ল্যাটফর্ম, ইনস্টাগ্রাম থেকে আরও ১০৩টি পেজ, অ্যাকাউন্টও বন্ধ করেছে।

পেজ, অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করার পর গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে গ্লেচার বলেন, আমরা যা দেখেছি, সে ব্যাপারে বোঝাতে, ওদের প্রশ্নের উত্তর দিতে কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি আমরা। আমরা যেমন আচরণ দেখেছি, বুঝেছি, সে ব্যাপারে সরকার, পলিসি নির্মাতারা যাতে বুঝতে পারেন, সেজন্য তাদের কাছেও গিয়েছি। ওইসব পেজের অ্যাডমিনরা, অ্যাকাউন্টের মালিকরা স্থানীয় সংবাদ, রাজনৈতিক বিষয় পোস্ট করতেন, যার মধ্যে আসন্ন নির্বাচন, প্রার্থীদের মতামত, কংগ্রেস ও বিজেপি সহ কংগ্রেসের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সমালোচনা থাকত। এর পিছনে থাকা লোকজন নিজেদের পরিচয় গোপন করার চেষ্টা করত, আমাদের রিভিউয়ে দেখা গিয়েছে, তারা কংগ্রেসের একটি আইটি সেলের সঙ্গে যুক্ত ছিল।