বনগাঁ, উত্তর ২৪ পরগনা: বনগাঁ থানাকে নোটিস দিল সিবিআই (CBI Notice to Bongaon Police Station)। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেয়ে নোটিস। ইডি-র ওপর হামলার ঘটনার তদন্তে নেমে সিবিআই দেখে শঙ্কর আঢ্যের বাড়ির বাইরে ৩টি সিসি ক্যামেরা আছে। পুরো হামলার ঘটনার স্পট  দেখা যাবে এই ৩টি ক্যামেরা থেকেই। কিন্তু এই ৩টি ক্যামেরারই তার খোলা, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। সিসি ক্যামেরার নজরদারির দায়িত্ব বনগাঁ থানা এবং বনগাঁ পুরসভার। এরপরই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেয়ে এবং ক্যামেরার পরিস্থিতি জানতে বনগাঁ থানাকে নোটিস দেয় সিবিআই। নোটিস দেওয়া হয়েছে বনগাঁ পুরসভাকেও। বনগাঁ পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান গোপাল শেঠের কাছেও ফুটেজ চেয়ে নোটিস। শঙ্কর আঢ্যের স্ত্রীকেও বাড়ি এবং পার্টি অফিসের ফুটেজ চেয়ে নোটিস। ২০ মার্চের মধ্যে ফুটেজ জমা দিতে বলে নোটিস।


ED-র ওপর হামলার তদন্তে, সন্দেশখালির পর সোমবার বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত শঙ্কর আঢ্যর বাড়িতে গেল CBI। আর এই মামলার তদন্তে এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নজরে সিসিটিভি ফুটেজ। সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে বনগাঁ থানা ও তৃণমূল পরিচালিত বনগাঁ পুরসভাকে নোটিস দিয়েছে CBI। নোটিস পেলেন তৃণমূল পরিচালিত বনগাঁ পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান গোপাল শেঠও।  ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ চেয়ে নোটিস দেওয়া হল ধৃত শঙ্কর আঢ্যর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যকে।


সন্দেশখালির মতো এদিনও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে ছিলেন সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরোটারির অফিসাররা। তদন্তে সাহায্য নেওয়া হল 3D লেজার স্ক্যানিং-এর বিশেষ প্রযুক্তির। ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে ED আধিকারিকদের ওপর হামলার দিনই, বনগাঁতেও শঙ্কর আঢ্যের বাড়ির সামনে হামলার মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসাররা। তৃণমূল নেতাকে নিয়ে গাড়িতে তোলার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
 
ইট ছুড়ে ভেঙে ফেলা হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সির গাড়ির কাচ। গোটা ঘটনাটি ঘটে শঙ্কর আঢ্যর বাড়ির সামনের এই গলিতে। সেখানেই একটি ল্যাম্পপোস্টে এই তিনটি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। এদিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নজরে আসে এই তিনটে ক্যামেরা। ঘটনার দিন শঙ্কর আঢ্যকে বাড়ি থেকে বের করার সময় ঠিক কী হয়েছিল?


কারা জড়ো হয়েছিল সেখানে? ED-র গাড়ির ওপরই বা কারা ইট ছুড়েছিল, তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই তিনটি ক্যামেরার ফুটেজ হাতে পেলে এইসব প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু এদিন দেখা যায়, তিনটি ক্যামেরারই কেবল খোলা অবস্থায় রয়েছে। 


CBI সূত্রে দাবি, এই তিনটি সিসি ক্যামেরা বনগাঁ থানা ও তৃণমূল পরিচালিত বনগাঁ পুরসভার তরফ থেকে লাগানো হয়েছিল। এদিন সেই ফুটেজ পেতে উভয়পক্ষকে নোটিস দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ২০ মার্চের মধ্যে সেই ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। 


রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যর বাড়ির কাছেই বর্তমান চেয়ারম্যান গোপাল শেঠের বাড়ি। তাঁর বাড়ির সামনে লাগানো রয়েছে CC ক্যামেরা। সেই ফুটেজ পেতে এদিন তাঁর বাড়িতেও পৌঁছে যায় CBI। 


এদিন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি ঘটনার দিন উপস্থিত থাকা দুই ED অফিসারকেও ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। শঙ্কর আঢ্যর বাড়ির গেটের দৈর্ঘ্য মেপে দেখেন তদন্তকারীরা। যে রাস্তার সামনে শঙ্কর আঢ্যর অনুগামীরা জড়ো হয়েছিলেন, এদিন সেই রাস্তার দৈর্ঘ্যও মেপে দেখেন বিশেষজ্ঞরা। এদিন এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ঘটনাস্থলের ভিডিওগ্রাফিও করা হয়।