সন্দেশখালি: লোকসভা ভোটে (Lok Sabha Election 2024 ) বাংলায় অন্যতম হেভিওয়েট কেন্দ্র হল সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। জানুয়ারিতে পা দিয়েই সারা দেশের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল রামমন্দির ইস্যু। ঠিক সেভাবেই সন্দেশখালি ইস্যু রাজ্যের বুকে বড়সড় দাগ কেটে যায়। অভিযোগের পর অভিযোগে প্রায় জেরবার শাসকদল। দলে থাকাকালীন শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে জমি দখল থেকে শুরু করে নারী নির্যাতনের অভিযোগে আগুন জ্বলে এই এলাকায়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Centra Force) উপর হামলার পড়েই নড়ে বসে প্রশাসন।
নির্যাতিতাদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে বহুদিনের জমে থাকা অভিযোগ। যদিও এত সাতকাণ্ডের পরেও, বেশ দীর্ঘ সময় ধরে শেখ শাহজাহান অধরাই ছিল। যদিও তার গ্রেফতারিতেই বিতর্ক থামেনি। ভাইরাল ভিডিও, সহ একাধিক ইস্যুতে আজও ক্ষোভের আগুন বর্তমান। বলাইবাহুল্য, আজ লোকসভা ভোটের দিনে, তাই সবার নজরই ছিল এই কেন্দ্রতে। স্পর্শকাতর কেন্দ্রে আগে থেকেই কড়া নজর রাখছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবুও অশান্তিতেই কাটল অন্তিম দফা সন্দেশখালিতে।
শেষ দফায় সবার নজরে ছিল বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সন্দেশখালির ভোট। আর দিনের শেষে সেখানেই দফায় দফায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে উঠল। ভোটের দিনই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল বেরমজুর, বয়েরখালি, আগারহাটি, কানমারি, চুঁচুড়া মোড়-সহ সন্দেশখালির একাধিক এলাকা। ভোটের দিনে ফিরল সন্দেশখালির মহিলাদের আন্দোলনের ছবি। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ। জ্বলল আগুন। পুলিশের দিকে ধেয়ে এল একের পর এক ঢিল, পাটকেল। পাল্টা লাঠিচার্জ করল পুলিশ।
আহত হলেন এক মহিলা-সহ একাধিক গ্রামবাসী ও বিজেপির কর্মী সমর্থক। অথচ দুপুর একটা থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করলেও, কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মিলল বিকেল সাড়ে চারটেয়। সপ্তমে অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি। অশান্তির সূত্রপাত ভোটের আগে রাতে। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে পুলিশের ছদ্মবেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি ও মারধর করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। প্রতিবাদে বেড়মজুরে লাঠি-ঝাঁটা নিয়ে রাতপাহারা দেন তারা। অন্যদিকে, সরবেড়িয়া-আগারহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়, অর্থাৎ একেবারে শেখ শাহজাহানের গড়ে এক তৃণমূল কর্মীকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে।
অপরদিকে, আহত তৃণমূল কর্মী বলেন, বিজেপির ছেলেরা বুথের এজেন্ট বসেছিল। আমরা ওই বুথ থেকে এই বুথে আসছিলাম। এই বুথে তোমরা কেন ঢুকলে, এই বলেই লাঠিচার্জ।সেই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর তারপর থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। গ্রেফতারির প্রতিবাদে বাসন্তী হাইওয়ের ওপর রাজবাড়ি মোড়ের কাছে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসী ও বিজেপি সমর্থকদের একাংশ। পুলিশ বিক্ষোভ তুলতে গেলে দু'পক্ষের খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়।
আরও পড়ুন, 'কেন্দ্রীয় বাহিনী অপদার্থ..', বরানগরে ভাঙচুর-হামলাকাণ্ডে বিস্ফোরক BJP প্রার্থী সজল
যদিও বিজেপি সমর্থক অভিযোগ জানিয়ে বলেন, পুলিশের লোক ইট মেরেছে। আমাদের একজন অসুস্থ। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। আমরা বেরোব না, আমাদের বেরোতে বারণ করেছে।' কে বারণ করেছে? সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি সমর্থক বলেন , 'ওইতো পুলিশ বারণ করছে বেরোতে। পুলিশ বারণ করছে।' ভোট দিয়েছেন? কিনা বলতেই তাঁরা বলেন, 'হ্যাঁ, আমরা ভোট দিয়েছি। এখানে আমাদের ছেলেকে ধরে নিয়ে এসেছিলে বলে আমরা ছাড়াতে এসেছিলাম। আমার পিসশাশুড়িকে মেরেছে এখন খুব অবস্থা খারাপ।' কী হয়েছিল? প্রশ্নের উত্তরে বিস্ফোরক বিজেপি সমর্থক। অভিযোগ জানিয়ে বলেন, 'ইট মেরেছে পুলিশে।'
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।