আশাবুল হোসেন, দীপক ঘোষ ও সুমন ঘড়াই, কলকাতা : ভোট আসলেই যে শব্দগুলো বেশি করে শোনা যায় তার অন্যতম হল CAA এবং NRC, লোকসভা ভোটের মধ্যেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ভোটের আগেই দেশজুড়ে সিএএ লাগু করেছে কেন্দ্র। আর সেই থেকেই লাগাতার সিএএ-বিরোধিতা করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট কথা সিএএ লাগু হতে দেবনা, এ রাজ্যে। যেখানেি প্রচারে যাচ্ছেন, সেখানেই সিএএ বিরোধিতার সুড় চড়িয়েছেন। সিএএ ও এনআরসি-কে একই সুতোয় বেঁধে বলেছেন, সিএএ হচ্ছে মাছের মুড়ো, আর লেজাটা হচ্ছে এনআরসি। যেখানেই যাচ্ছেন মানুষকে সতর্ক করে দাবি করছেন, সিএএ-র জন্য আবেদন করা মানেই বিদেশি হয়ে যাওয়া। তখন আর তিনি এদেশের কোনও সুবিধা পাবেন না।                 

  


শুক্রবার প্রচারে গিয়ে একই সুরে সিএএ বিরোধিতা করলেন তিনি। মুর্শিদাবাদের জনসভা থেকে ভোটের মুখে ফের কৌশলে NRC এবং CAA-র প্রসঙ্গ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে জুড়ে দিলেন ভোটদান আর রেশন কার্ডকেও। বললেন, 'রমজান মাসে যারা বাড়ি এসেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা, ভোট না দিয়ে এক পাও নড়বেন না। যদি আপনি ভোট না দেন, আগামী দিনে আধার কার্ড থেকে আপনার নামটা বাতিল করে দেবে, দিয়ে NRC-তে ঢুকিয়ে দেবে। CAA-তে ঢুকিয়ে দেবে। এই সুযোগটা দেবেন না।' 


এখানেই থামেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'যেই আপনি অ্যাপ্লাই করলেন, ব্যস সব গেল! আপনি বিদেশি হয়ে গেলেন! আপনারা সবাই নাগরিক মনে রাখবেন, কোনও ভয় পাবেন না। যাঁর রেশন কার্ড নেই, যাঁর আধার কার্ড নেই হতাশায় ভুগবেন না, ভয় পাবেন না। নির্বাচনের পর আবার দরকার হলে 'দুয়ারে সরকার' করিয়ে দেব। ওখানে আবেদন জানাবেন। আপনার যা আছে তাই দিয়েই হবে। আপনি যে এখানে বসবাস করছেন, কাজ করছেন এটাই আপনার বড় পরিচয়।' কার্যত সিএএ-এনআরসি নিয়ে ভয়ের প্রচার করলেন তিনি। 


মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ' উনি নিজেই ঠিক করতে পারছেন না , কখন কী বলবেন। কখনও বলছেন এনআরসির বিরোধিতা করবেন। কখনও বলছেন সিএএ-র বিরোধিতা করবেন। কখনও বলছেন অভিন্ন দেওয়ানী বিধির বিরোধিতা করবেন। ওঁর বিরোধিতা করাটাই প্রকৃতি।'

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন অধীর চৌধুরীও। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, 'উনি এসব ভোটের চালাকি করার জন্য বলছেন। আর পরিষায়ী শ্রমিক, আপনার সরকারের মিস ম্যানেজমেন্টের জন্য হয়েছে পরিযায়ী, সে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। দায়িত্ব আপনার, ১২ বছরের সরকারের ব্যর্থতা।' 


তাহলে কি, ভোটের আগে CAA-NRC নিয়ে ভয়ের খেলা শুরু করেছে তৃণমূল? ভয়ের খেলায় ভোটবাক্সে কার লাভ? উত্তর মিলবে ৪ জুন। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 
আরও পড়ুন :                          


কোন কোন উপসর্গ দেখলে বুঝবেন হিটস্ট্রোক ? ব্রেন স্ট্রোকের সঙ্গে এর ফারাক কোথায় ?