আশাবুল হোসেন, মালবাজার : উত্তরবঙ্গ সফরের ( North Bengal ) দ্বিতীয় দিনে আজ জলপাইগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রী ( Mamata Banerjee )  নির্বাচনী সভা করলেন। মালবাজার ব্লকের ক্রান্তির ভাণ্ডারী ময়দানে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর এক বিষয়ে তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 



অনেকাংশে চা বাগান নির্ভর অর্থনীতি উত্তরবঙ্গের মালবাজার অঞ্চলে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি, ' চা-বাগানের শ্রমিকদের জন্য আমরা ঘর বানিয়ে দেব'। তিনি বললেন, এই এলাকার মানুষ ৩৪ বছরের বাম শাসন দেখেছেন। গত ১০ বছর কেন্দ্রে বিজেপির কাজও দেখছেন। কিন্তু তাঁদের জন্য কাজ করেছে তৃণমূলই। মমতার দাবি, 'আমরা এলাকার প্রায় সব চা-বাগান খুলে দিয়েছি,  বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাগান খোলার, কিন্তু ওরা করেনি তৃণমূল করেছে'।তিনি আরও বলেন, ' ৩লক্ষ চা-শ্রমিককে পাকা বাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি এখন ৬৭টাকা থেকে বেড়ে প্রতিদিন ২৭২ টাকা হয়েছে। 'আমার বিশ্বাস এবার জলপাইগুড়ি-কোচবিহারের মানুষ আমাদের পাশে থাকবে' 

সেই সঙ্গে চা বাগানের শ্রমিকদের দিলেন একগুচ্ছ পরিস্থিতি। বললেন, ' চা-বাগানের শ্রমিকদের আমরা চা-বাগানের পাট্টা দেব, কাজ শুরু হয়ে গেছে।  সিপিএম-বিজেপি কিচ্ছু করেনি'। তিনি আরও বলেন, 'জলপাইগুড়িতে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হয়েছে'। 


গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে ভাল ফল করেছে বিজেপি। গেরুয়ার শক্ত ঘাঁটে থেকেই তিনি তৃণমূল সরকারের একের পর এক কাজের কথা তুলে ধরলেন। বললেন, ' মানুষের অভিয়োগের নিষ্পত্তির জন্যই দুয়ারে সরকার, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে'।

সোমবার কোচবিহারের মাটি থেকেও বিএসএফকে শাণিত আক্রমণ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মালবাজার থেকেও শোনা গেল সেই সুর। বললেন, 'বিএসএফ-এর গুলিতে কোচবিহারে অনেকে মারা গেছে। বিএসএফ-কে বলব নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে' । কোচবিহারে তিনি বলেছিলেন ২০২৪ এর ভোটে কেন্দ্রে বিজেপি থাকবে না, নতুন সরকার আসবে। মঙ্গলবারও বললেন, ' মোদি আজ আছেন কাল নেই, আপনাদের তো দেশের সীমান্ত রক্ষা করতে হবে। আজকেও সীমান্তে গুলিতে একজন মারা গেছেন, তার জন্য অ্যাকশন নেওয়া হবে।  যিনি মারা গেছেন তাঁর পরিবারের একজন হোম গার্ডের চাকরি পাবেন। দেশকে বেচে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার । টমেটো দাম  কেজিতে একশ টাকারও বেশি হয়ে গেছে দিল্লি-মুম্বাই-এ ।  বাংলার মাটিতে ভয় দেখিয়ে কিছু করা যায় না'

সোমের বক্তব্যের সুর ধরেই বললেন, ' আগে আমরা দেখতাম না, এবার পঞ্চায়েত জেতার পর দল নজর রাখবে।  কাউকে এক পয়সা দেবেন না, এসবই আপনার অধিকার।  কেউ টাকা চাইলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন।  পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ সর্বত্র তৃণমূল জিতবে'


সোমবার কোচবিহারে প্রথম নির্বাচনী সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে আঘাত হানাই তৃণমূলের লক্ষ্য। তাই দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়িয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে উত্তরবঙ্গ থেকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করেছেন মমতা। মঙ্গলবারই ফিরবেন কলকাতায়। এরপর জঙ্গলমহলেও সভা করার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সাধারণত পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নামেন না মমতা। সেদিক থেকে এবারের নির্বাচন ব্যতিক্রম।