সনৎ ঝা, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, অর্ণব মুখোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: এবার লোকসভা ভোটের টিকিট নিয়ে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর ঘরেই ! হাওড়া সদর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করে নির্দল হিসেবে লড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই স্বপন ওরফে বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ভাইয়ের দাবি, হাওড়ায় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা ঠিক হয়নি। 'যে ক্লাস ফাইভ পাস করতে পারে না, তাঁকে গ্র্যাজুয়েশন করিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও হাওড়ায় অনেক যোগ্য লোক ছিল।'
এরপর উত্তরবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলেই তিনি ক্ষুব্ধ হন। বলে দেন, 'আজ থেকে আমার ভাই হিসেবে কেউ কোনও পরিচয় দেবেন না'। ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমার পরিবার বলে কিছু নেই। পরিবারকে বাদ দিয়ে যে যাঁর খেলা খেলুক।
'আজ থেকে আমার ভাই হিসেবে কেউ কোনও পরিচয় দেবেন না। আজ থেকে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলাম'।
সেই সঙ্গে তিনি সকলের কাছে পরিষ্কার করে দেন হাওড়ায় দলের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এবং তৃণমূল তাঁকে জেতাতেই জান-প্রাণ দিয়ে লড়বে। ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ওরফে বাবুনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'কেউ একটু বড় হলেই লোভ বেড়ে যায়'। তারপরই অতীতের কথা টেনে এনে মমতা বলেন, যখন তাঁদের বাবা মারা যান, তখন বাবুনের বয়স আড়াই। দুধের ডিপোয় কাজ করে ভাইদের মানুষ করেছেন তিনি । কিন্তু এখন আক্ষেপের সুর তাঁর গলায়, 'বোধ হয় ওকে মানুষ করতে পারিনি।' সেই সঙ্গে মমতা বলেন, 'যাঁর কথা বলছেন, তাঁর অনেক কাজকর্ম অনেকদিন ধরেই আমার পছন্দ নয়'।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার করে দেন, 'আমি পরিবারতন্ত্র করি না, এটা তার প্রমাণ'। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, 'প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতানোর দায়িত্ব আমাদের আরও বেড়ে গেল। কিছু লোভী লোক প্রসূনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাইছে, তাই দায়িত্ব বে়ড়ে গেল'।
এই খবর শোনামাত্রই নিজের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, হাওড়া সদর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করে নির্দল হিসেবে লড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েও পিছু পটলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন তিনি লড়বেন না নির্দল প্রার্থী হিসেবে। বলে দিলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিভাবক হিসেবে যা বলেছেন ঠিক বলেছেন, দিদি যা বলেছেন, আমি আশীর্বাদ হিসেবে নিচ্ছি'।
আরও পড়ুন :
কাছা-পরিহিত অবস্থায় দাঁড়িয়েছিলেন পার্টির পতাকা হাতে, গাড়ি থামিয়ে কাছে ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী, তারপর...