অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর : ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে বড় ধাক্কা। দল ছাড়লেন বঙ্গ বিজেপির অন্যতম পরিচিত মুখ। তিনি বিধানসভার কোর কমিটির মেম্বার তথা জেলা কমিটির সদস্য। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন তিনি। লোকসভা ভোটের ঠিক আগে দল ছা়ড়লেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের, দাঁতন বিধানসভার মোহনপুরে বিজেপি নেতা শক্তি নায়েক ।
২০২১ সালের বিধানসভার ভোটে তিনি বিজেপির টিকিটে দাঁতন বিধানসভা থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সময় তৃণমূলের দাঁতন বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন বিক্রমচন্দ্র প্রধান। বিধানসভায় বিক্রমচন্দ্র প্রধানের কাছে পরাজিত হন বিজেপি প্রার্থী শক্তি নায়েক। তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের মার্জিন ছিল মাত্র ৬২৩ টি ভোট। সেই শক্তি নায়েক ভোটের ঠিক আগে দলীয় সমস্ত পদ ছাড়লেন। সেইসঙ্গে ছাড়লেন দলও। সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি অন্য কোনও দলে যোগদান করবেন কিনা সে বিষয়ে যদিও তিনি এখনও মুখ খোলেননি।
দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে কেন সরে দাঁড়ালেন তিনি ? শক্তি নায়েক জানালেন, ২০২৬-এ দাঁতন বিধানসভায় জেলার অনেকেই আছেন যাঁরা প্রার্থী হতে চান। নিচু তলার কর্মীরা বিজেপিকে জেতানোর জন্য লড়াই করছে । কিন্তু শক্তি নায়েকের দাবি, ' দলে যা চলছে... পুরনোদের ঝেটিয়ে বাদ দেওয়া। উপরে নেতারা ২৪ এর জন্য নয় ২৬ এর জন্য লড়াই করছে গুঁতোগুঁতি করছে ।'
তাঁর মতে , '২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই রকম বিষয় এই পার্টিতে ছিল না । এখন আমি এদের সঙ্গে মানাতে পারছিনা। আমার সঙ্গে নোংরামি করা হয়েছে, আমি বারবার পার্টিতে জানিয়েছি আমার সম্পর্কে আলোচনা করা হোক। গত লোকসভা ভোটে দিলীপ ঘোষের সংযোজক হিসেবে কাজ করেছিলাম এবং লিডও দিয়েছিলাম। বর্তমানে এই দলে যোগ্যতার কোনও ব্যাপার নেই, চামচাগিরি করতে পারলে নেতা হওয়া যাবে। ... আমাকে শুধু একটা জেলা কমিটির সদস্য বানিয়ে দেয়া হয়েছে কাজকর্মে কিছু ডাকা হয় না আমি সেটা সুদাম পণ্ডিত, জেলা সভাপতিকে জানিয়ে দিয়েছি আমি দল ছেড়ে দিচ্ছি।'
তিনি আরও বলেন, ' একটা দুর্বল লোককে জেলা সভাপতি করে দেওয়া হয়েছে তার কিছু করার নেই। এই মুহূর্তে অন্য কোনও দলে যোগদান করার ভাবনা নেই । মোহনপুর ব্লকে যারা এখন বিজেপি করছেন সবাই আমার হাত থেকেই দলের ফ্ল্যাগ নিয়েছেন। দলের সমস্ত পদ, ও দল ছেড়ে দিলাম।'
এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সাধারন সম্পাদক গৌরি শংকর অধিকারী বলেন,"কে দলে থাকবেন,কে দল ছেড়ে যাবেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তাঁর কোনো অভিযোগ থাকলে সংবাদ মাধ্যমকেই জানাচ্ছেন এটা আমাদের দলের সিস্টেম নয়। ওনার যদি কিছু জানানোর থাকে অভিযোগ থাকে, উচ্চতর নেতৃত্ব আছে দলের পরিকাঠামো আছে তার মধ্যে গিয়ে বলতে হবে। তিনি বার বার মিডিয়াকে জানাচ্ছেন । তিনি দলের প্রতি কতটা দায়বদ্ধ ও কতটা স্টিস্টেম মানেন সেই প্রশ্ন চিহ্ন থেকে যায়! আর আমি এত বড়ো সংগঠক হয়ে যাইনি যে নারায়ণগড় থেকে গিয়ে দাঁতন বিধানসভায় প্যারালাল টিম তৈরীর পরিস্থিতি হবে। ওনার যদি কোনো অভিযোগ থাকে দলের উচ্চতর নেতৃত্বকে গিয়ে জানান। এটাই দলের সিস্টেম এটা করা উচিত।'
আরও পড়ুন :