কলকাতা : করোনা আবহে রাজ্যের চার পুরসভায় ভোটের ভবিষ্যৎ কী ? রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নিজের নিজের অবস্থান নিয়ে উঠছে এই প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে আজ পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত মামলায় শুনানি চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, "রাজ্য অবস্থান পরিষ্কার করুক তারা নির্বাচন চায় কি চায় না।" কারণ শুনানিপর্বে রাজ্য দাবি করেছে, দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি কমিশনের এক্তিয়ার। অন্যদিকে কমিশন বলছে, এনিয়ে স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।


রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে ( Calcutta High Court) পুরভোট (West Bengal Municipal Election 2022) পিছানোর আবেদন জমা পড়েছিল। তবে সম্প্রতি হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, ‘নির্ঘণ্ট মেনে ২২ জানুয়ারিই হবে ৪ পুরসভার ভোট’। চন্দননগর, বিধাননগর, শিলিগুড়ি এবং আসানসোল পুরসভার ভোট করা হবে ওই নির্ধারিত দিনেই। এও জানানো হয়েছে, এই পুরসভাগুলির নির্বাচন পিছনোর কোনও পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই। ভোট পিছোনোর দাবিতে মামলায় হাইকোর্টে আজ ফের শুনানি হয়। 


আরও পড়ুন ; 'বিধি ভেঙে ৫ জনের বেশি লোক নিয়ে প্রচার', ফের দিলীপকে ‘বাধা’ পুলিশের


রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে আজ আর্টিকল 243Z এর ব্যখ্যা চান প্রধান বিচারপতি। কিন্তু কমিশন জানায়, আদৌ এই ধারায় কমিশনকে ভোট পিছনোর দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। শুধু ভোটার তালিকা তৈরির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।


তবে, পুরভোট হলেও এই করোনা আবহে ঠিকমতো তার আয়োজন করা কতটা সম্ভব  ? এই প্রশ্ন উঠছে। আগের দিনের শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি জানতে চেয়েছিলেন, এই যে চার পুরনিগমে ভোট হতে চলেছে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা কত ? সেখানে কন্টেনমেন্ট জোন কত ? রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কি এই পরিস্থিতিতে ভোট করানোর পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে ? এনিয়ে আজ কমিশনের তরফে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়, রাজ্যের করোনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আছে। তাছাড়া ১২ হাজার ৪০০ ভোটকর্মী রয়েছেন(রিজার্ভ ভোটকর্মী মিলিয়ে আছেন)। এর মধ্যে ৯ হাজারের কিছু বেশি নিযুক্ত হবেন। ৩৭৫০ কর্মী রিজার্ভে থাকবেন। প্রত্যেকে ভ্যাকসিন পেয়েছেন। বুথে গ্লাভস, মাস্ক ইত্যাদি পরে এরা কাজ করবেন।


অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয়, চারটি পুরসভায় কার্যত ১০০ শতাংশ ভ্যাকসিনেশন সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। যাঁরা কন্টেনমেন্ট জোনে আছেন, তাঁরা একেবারে শেষলগ্নে এসে ভোটদান করতে পারবেন। রাজ্যের তরফে আরও জানানো হয়, আসানসোলে ১৬.০৪ শতাংশ সংক্রমণ হয়েছে। আসানসোলে প্রথম ডোজ ৯৮%, দ্বিতীয় ডোজ ৯৫% মানুষ পেয়েছেন। ৯ % সংক্রমণ চন্দনগরে। বিধাননগরে ১০০% মানুষ দুটি ডোজই পেয়েছেন। ১৯.৫% সংক্রমণ শিলিগুড়িতে। সেখানে একশ শতাংশ প্রথম ডোজ, ৯২% দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন।


সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শুনে আপাতত রায়দান স্থগিত রেখেছে হাইকোর্ট।