শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা : দুর্নীতি থেকে সন্দেশখালি, কৃষ্ণনগরের সভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়ালেন মোদি (Narendra Modi Attacks TMC)। বাংলায় এসে বাংলার মানুষের কাছে আর্জি রাখলেন বিজেপিকে সুযোগ দেওয়ার। আর বঙ্গ বিজেপির সামনে রাখলেন চড়া টার্গেট ! ৪২-এ ৪২। বললেন, বাংলার বিকাশ হলেই দেশের বিকাশ হবে, কিন্তু তার জন্য ৪২টি আসনেই পদ্ম ফোটাতে হবে। সেই সঙ্গে তৃণমূলকে পদে পদে করলেন আক্রমণ। লিখলেন, তৃণমূল মানে তু ম্যাঁয় করাপশন হি করাপশন।

  


১০০ দিনের কাজে টাকা না দেওয়ার অভিযোগে  তৃণমূল সরকার কেন্দ্রকে বিদ্ধ করছে প্রতি মুহূর্তে। আর এবার মোদি করলেন পাল্টা আক্রমণ ।  ১০০ দিনের কাজ থেকে রেশন, জল থেকে সরকারিব প্রকল্প, তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন ছত্রে ছত্রে। কৃষ্ণনগরের সভা থেকে বললেন,  তৃণমূল সরকার সব স্কিমকে স্ক্যামে পরিণত করে। 


এদিন নরেন্দ্র মোদি ভুয়ো কার্ড নিয়েও তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেন । বলেন, ' মনরেগায় ২৫ লক্ষ ভুয়ো জব কার্ড তৈরি করা হয়েছে। এমনকী, যার জন্ম হয়নি তার নামেও জব কার্ড হয়েছে। তৃণমূল সরকার গরিব শ্রমিকের টাকা লুঠ করেছে। তৃণমূলের চেষ্টা কেন্দ্রীয় যোজনায় নিজেদের নামের স্টিকার লাগানো। ' 


মোদির অভিযোগ, 'যে ভাবে তৃণমূলের সরকার চলছে, তাতে বাংলার মানুষ হতাশ। বাংলার মানুষ অনেক আশা নিয়ে তৃণমূলকে বারবার বিপুল জনাদেশ দিয়েছে। কিন্তু টিএমসি বাংলার মানুষের সঙ্গে অত্যাচার ও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তৃণমূল মানে বিশ্বাসঘাতকতা ও পরিবারতন্ত্র' ।


কৃষ্ণনগরের জনসভায় তো বটেই  প্রধানমন্ত্রী শনিবার একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করেও ভাষণে  তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া আক্রমণ করেন। বলেন, 'স্বাধীনতার পর পশ্চিমবঙ্গের যে গৌরবময় ঐতিহ্য ছিল সেটাকে ঠিকঠাক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি। এইজন্যই যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলা ক্রমশ পিছিয়ে পড়েছে। গত দশ বছরে এই ক্ষতিপূরণের জন্যই আমরা এই রাজ্যে রেলের পরিকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ জোর দিয়েছি। আমাদের সরকার এরাজ্যের রেলের উন্নয়নে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করেছে। কৃষ্ণনগরের প্রশাসনিক সভায় দাবি প্রধানমন্ত্রীর।'  


কৃষ্ণনগরের সভার পর শনিবার বঙ্গ বিজেপির দুই সারথি সুকান্ত মজুমদার ও  শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।  বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যের সমস্যাগুলির কথা তুলে ধরেন। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির আলাদা সাক্ষাৎও হয়েছিল রাজভবনে। সেখানে কী বিষয়ে আলোচনা হল, তা কি জানতে পারলেন সুকান্তরা ? বিজেপির রাজ্য সভাপতি   এবিপি আনন্দ-কে জানালেন, প্রধানমন্ত্রী যতটুকু জানানোর ততটুকুই জানিয়েছেন। আর তাঁরাও প্রধানমন্ত্রীকে বাংলার  'প্রকৃত চিত্র' তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।