সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বের একেবারে শুরু থেকেই বারবার সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছে বিরোধী দলগুলি। ঝরেছে রক্ত, গিয়েছে প্রাণও। বারবার বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ছবি সামনে এসেছে। একই অভিযোগ উঠেছে ক্যানিংয়েও। ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকে, বিভিন্ন পঞ্চায়েতের মোট ২৭৪টি আসনে বিরোধীরা মনোনয়নপত্রই জমা দিতে পারেনি। এই ঘটনায় হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বিজেপি। একটি জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে। প্রার্থী না থাকলে, ভোটাররা কীভাবে ভোট দেবেন? এই প্রশ্ন তুলে জনস্বার্থ মামলা করেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। এদিনই যা শুনানি হওয়ার কথা। 


বসিরহাট থেকে বড়ঞা। ভাঙড় থেকে ক্যানিং। মনোনয়নপত্র জমার প্রথম দিন থেকে, পদে পদে বিরোধী প্রার্থীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে বসিরহাট এবং বড়ঞায় বিরোধীদের সহায় হয়েছে হাইকোর্ট। এই সময়েই ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকে মনোনয়নপত্র ইস্যুতে হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হার দৃষ্টি আকর্ষণ করল বিজেপি। একই বিষয়ে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।


আবেদনে কী রয়েছে?
বিজেপির আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকে, বিভিন্ন পঞ্চায়েতের মোট ২৭৪টি আসনে বিরোধীরা মনোনয়নপত্রই জমা দিতে পারেনি। পাশাপাশি ক্যানিং ১ নম্বর ব্লক নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ২৭৪টি আসনে যেহেতু বিরোধীরা মনোনয়নই জমা দিতে পারেননি, তাই প্রার্থী না থাকলে ভোটাররা ভোট দেবেন কীভাবে? 


পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপর্বের শুরু থেকেই বারবার উত্তপ্ত হয়েছে ক্যানিং। কখনও শাসকদলের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এই এলাকা। কখনও ক্যানিং ১ নম্বর ব্লক অফিস চত্বরে বিরোধীদের ওপর হামলা হয়েছে। মেরে ধরে, লাঠিপেটা করে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বিজেপি প্রার্থীদের। মহিলা প্রার্থীদের ওপরেও হামলার অভিযোগ উঠেছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যের শাসক দলের দাপটে 


তৃণমূলের দাপটে, বহু বিরোধী প্রার্থীই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। আর সেই প্রেক্ষাপটেই ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। এর আগে বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের বাধায় বিরোধীরা মনোনয়নপত্র পেশ করতে পারেননি - এই অভিযোগে হাইকোর্টে গিয়েছিল বিজেপি। সেই মামলায় বিচারপতি সিন্হা, তাঁর নির্দেশে বলেন, সন্দেশখালি ১ ও ২, মিনাখাঁ, এবং হাড়োয়া - বসিরহাটের এই ৪টি ব্লকের প্রায় ৬০ জন বিজেপি প্রার্থী তাঁদের মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন মহকুমাশাসকের কাছে। সেই মতো ওই ৪ এলাকার বিজেপি প্রার্থীরা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে মনোনয়নপত্র জমাও দেন।


যদিও ইতিমধ্যেই মনোনয়ন জমা দেওয়া এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন পেরিয়ে গেছে। এবার ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকের এই মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট কী পদক্ষেপ করে, বিরোধীরা ২৭৪টি আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগ পান কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।


আরও পড়ুন: প্রতিদিন নিয়মিত মধু সেবনে কী কী উপকার হতে পারে আমাদের স্বাস্থ্যের?