সুদীপ চক্রবর্তী, রাজীব চৌধুরী, সৌমিত্র রায়, চোপড়া : মনোনয়নের 'ষষ্ঠী'তে বাজল দশমীর 'বিসর্জনের' সুর। আরও একবার রক্তস্নাত হল বঙ্গভূমি! মনোনয়নের শুরু থেকে শেষ, এখনও অবধি রক্তাক্ত রাজনীতির বলি হলেন একের পর এক বিরোধী কর্মী। কখনও কংগ্রেস, কখনও আইএসএফ। কখনও গুলিবিদ্ধ সিপিএম কর্মী। 


'আজ যখন সাহস সঞ্চয় করে, মানুষ যখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য় প্রচেষ্টা করছে, তখন তাদের ওপর গুলি বর্ষণ হচ্ছে। সম্পূর্ণ রাজ্য় সরকার দায়ী এর জন্য়।' , মন্তব্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। 


কংগ্রেস-সিপিএমের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ
মনোনয়নের শুরুটা হয়েছিল শ্য়ুটআউটে মৃত্য়ু দিয়ে, শেষও হল সেই শুটআউট এবং মৃত্যু দিয়েই ! মাঝে শুধুই বোমাবাজি, গুলি, আগুন, রক্তপাত, হামলা। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় কংগ্রেস-সিপিএমের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।


গুলিবিদ্ধ সিপিএম কর্মী ফারুক বললেন, ' আমি নমিনেশন ফাইল করতে যাচ্ছিলাম আমরা। ওরা অ্যাটাক করেছে আমার ওপর। ' তাঁর অভিযোগ তৃণমূলের দিকে। 


চোপড়ায় একটিও মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বিরোধীরা


মনোনয়নের প্রথম ৫ দিনে চোপড়ায় একটিও মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বিরোধীরা। অভিযোগ, বিডিও অফিসে যাওয়ার সবকটি রাস্তা আটকে রাখে তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী।  শেষ দিনে, মনোনয়ন জমা দিতে একজোট হয় বাম কংগ্রেস।


বিডিও অফিস থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লালবাজার এলাকায় একজোট হন বাম-কংগ্রেস কর্মীরা। এরপর মিছিল বিডিও অফিসের দিকে এগোতে থাকে।  বিডিও অফিস থেকে ১৫০ মিটার দূরেই চোপড়া থানা। অভিযোগ, মিছিলের যাত্রাপথে কোথাও ছিল না পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিডিও অফিসের ৭ কিলোমিটার আগে কাঁঠালবাড়িতে মিছিল পৌঁছতেই বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের ওপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তারা প্রত্যেকেই তৃণমূল আশ্রিত বলে অভিযোগ বাম ও কংগ্রেসের। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বাধা পেরিয়ে মিছিল এগোতে গেলে, মিছিল লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চলে। 
গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন বিরোধী দলের কর্মী।


আহত সিপিএম কর্মী মুস্তফা আলম বললেন, ' একদম AK-47 দিয়ে ফায়ারিং চালু। পুলিশের কোনও নিরাপত্তা নেই। আমারও পায়ে গুলি লেগেছে, আমি পড়ে গেছি ওখানে। এরা তো ডায়রেক্ট গুলি চালাচ্ছে, ওপেনলি গুলি চালাচ্ছে। AK-47 দিয়ে।'


যদিও  মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলছেন, 'চোপড়ার ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। ওটা সিপিএম করিয়েছে' 


চোপড়ার ঘটনার পর এই ফেসবুক পোস্ট করে সিপিএমের রাজ্য় সম্পাদক মহম্মদ সেলিম লেখেন প্রাথমিক খবর অনুসারে নিহত ২, আহত কমপক্ষে ২০। 


উত্তর দিনাজপুর কংগ্রেস জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বললেন,  'মনোনয়ন পত্রের প্রথমেই শুক্রবারেতেই মুর্শিদাবাদে একজন মারা গেছে। আমাদের কংগ্রেস কর্মী। আজকে শেষে, জানিনা অন্য কোন জেলায় কী হয়েছে,আমাদের জেলায় ২ জনকে মারা হয়েছে। একজন কংগ্রেসের একজন সিপিএমের। এই হল মমতা ব্যানার্জির পঞ্চায়েত ভোট করার নমুনা।' 


একের পর এক প্রাণ যাচ্ছে! নীরব থাকছে রাজ্য় পুলিশ-প্রশাসন-কমিশন! 

আরও পড়ুন : ১৬ জুন পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত সব ব্রেকিং নিউজ পড়ুন এখানে