কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: জেলায় জেলায় অশান্তি, খুনোখুনির মধ্যে শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) মনোনয়ন পর্ব (Nomination Filing)। তার মধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের দাবি তুলে, ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় তৃণমূলের উল্লাস নজরে এসেছে। তবে এবার উলটপুরাণ পূর্ব বর্ধমানের রায়নাতে। রায়নায় দু'টি পঞ্চায়েতের দু'টি আসনে জয়ী হয়েছে বামেরা, এমনটাই দাবি সিপিএমের।
কেন এমন দাবি বামেদের ?
রায়নার পাইটা ২ নং জিপির একটা আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি তৃণমূল। আবার শ্যামসুন্দর জিপি-র একটি আসনে মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ায় সেখানেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় সিপিএম। এরকমই উলটপুরাণ কাণ্ড ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রায়নাতে। রায়না ১ ব্লকের শ্যামসুন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৮ নম্বর বুথ (পঞ্চায়েতের সাত নম্বর আসন)-টি অনগ্রসর জাতিদের জন্যে সংরক্ষিত রয়েছে। এই আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল চাঁদ মহম্মদ মল্লিককে।
কী বলছে শাসকদল ?
তৃণমূল সূত্রে খবর, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে জাতিগত শংসাপত্র তাদের প্রার্থী জমা দিতে পারেনি।শনিবার মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পরে তা বাতিল হয়ে যায়। ওই আসনে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে যেহেতু রয়ে যায় সিপিএমের ইসমাইল মোল্লা, তাই তিনি জয়ী হয়ে যান।
শুধু ওই পঞ্চায়েত নয়, রায়না ২ ব্লকের পাইটা ২ পঞ্চায়েতের এক নম্বর আসনেও (বুথ নম্বর: ১৯১) সিপিআইএম প্রার্থী দিলেও, শাসকদল তৃণমূল ও অন্যান্য বিরোধী দল কেউই প্রার্থী দিতে পারেনি। এই আসনটি অনগ্রসর শ্রেণির মহিলাদের জন্যে সংরক্ষিত ছিল। এই বুথে সিপিএমের প্রার্থী হিসাবে সবিতা মাথুর একা থেকে যান। শাসকদলই প্রার্থী দিতে পারেনি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে তৃণমূল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
আরও পড়ুন, সাঁতারে কী কী রোগ থেকে মুক্তি ? কী বলছেন চিকিৎসক ?
আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?
'তৃণমূল করতে লজ্জা..'
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, যদি নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তাহলে লুটেরাদের হঠিয়ে জনগণের পঞ্চায়েত গঠনের যে আওয়াজ গ্রামে গ্রামে উঠেছে, তাতে তৃণমূল কোনও প্রার্থীই পেতো না। অনেকে তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে চলে গেছে। গ্রামে তৃণমূল করতে লজ্জা পাচ্ছে।'
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের দাবি, সিপিএমকে তৃণমূল পেশ করছে বাংলায় বিজেপিকে আটকানোর জন্য।উন্নয়ন যদি হয়ে থাকে, তাহলে প্রার্থী হয়নি কেন ? আসলে নেতাদের উন্নয়ন হয়েছে, তাই নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কারণেই প্রার্থী দিতে পারেনি।
রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, 'খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি কী কারণে প্রার্থী দিতে পারেনি।'