আবির দত্ত ও শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকেই অশান্তির কার্যত হটস্পট হয়ে রয়েছে কোচবিহার। এখনও ভোট-সন্ত্রাস অব্যাহত সেখানে ! গতকাল ভোটের পর থেকে শতাধিক কর্মী ও সমর্থক ঘরছাড়া হয়েছেন বলে অভিযোগ বিজেপির। তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের গোপালের কুঠি এলাকার এক বিজেপি প্রার্থী-সহ অনেকে সীমানা পেরিয়ে চলে গিয়েছেন অসমে। যাবতীয় অভিযোগের কেন্দ্রে তৃণমূল। শাসকদল এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
মানুষ কেন ভোট দিতে যান ? গ্রামের উন্নয়নের আশায়। কাদা প্যাচপ্যাচে রাস্তাটা ভাল হবে, মাথার ওপর ছাদটা পাকা হবে - এই আশায় ! কিন্তু, অভিযোগ, দখলদারির রাজনীতির দাপটে সেই ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হচ্ছে অনেককে। কোচবিহারে দেখা গেল সেই ছবি। আতঙ্কিত এক বিজেপি কর্মী বলেন, 'এখনও আমাদের গ্রামে ৪০০ বাইক বাহিনী আছে, এখনও।' অপর এক বিজেপি কর্মী বলেন, 'আমরা পুরো আতঙ্কে আছি। আমাদের বাড়িঘর ভাঙবে, ওরা হুমকি দিচ্ছে বারবার। ওই জন্য ছাড়ছি বাড়িঘর। আমার স্ত্রী-সন্তান কোথায় আছে, তার খোঁজ নেই।'
শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিন কোচবিহারের দিনহাটা-সহ বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩টি।
প্রাণ হারিয়েছেন সাধারণ ভোটার ! গুলি-বোমার দাপটে তটস্থ সাধারণ মানুষ ! উঠেছে দেদার ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ। ভোট মিটে যাওয়ার পরও অশান্তি থামেনি। এই প্রেক্ষাপটে দলীয় কর্মী ও সমর্থক-রা তৃণমূলের দাপটে ঘরছাড়া হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। কোচবিহারের তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের গোপালের কুঠি থেকেও দলের বহু কর্মী ও সমর্থক পাশের রাজ্য অসমে, আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে বিজেপির দাবি। তৃণমূলের সন্ত্রাসে তাঁরা ঘরছাড়া বলে অভিযোগ করেছে গেরুয়া শিবির।
তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের ২৪৪ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, 'ওখানকার থেকে লোক এসে আমার বাড়িতে ঢুকে হুমকি দিয়ে চলে গেল। এখন আমরা সব লোক নিয়ে অসমে আশ্রয় নিয়েছি। মোটামুটি ৩৫০-র বেশি লোক অসমে। ভয় দেখিয়েছে। মারধর করেছে।' গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগে, কোচবিহারের বহু বিজেপি কর্মী আশ্রয় নেন অসমের বিভিন্ন শিবিরে। তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় অসমে গিয়ে সেই ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসেছিলেন। এবার পঞ্চায়েত ভোটের আবহেও কোচবিহারে ফিরল সেই ছবি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন