ডায়মন্ড হারবার : পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) মনোনয়নের শেষ দিনেও রক্তাক্ত বাংলা, চোপড়ায় খুন, অশান্ত ভাঙড়ও ! এরমাঝেই বিরোধীদের রাজ্যজুড়ে হিংসার জন্য দায়ী করার পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরায় বিরোধীদের মনোনয়ন পর্যন্ত জমা দিতে দেওয়া হয়নি বলেই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (CM Mamata Banerjee)।


রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দেওয়া মনোনয়ন পর্বের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর ডায়মন্ড হারবারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেছেন, 'যতদূর শুনেছি লক্ষাধিক মনোনয়ন জমা পড়েছে, যা কোনও রাজ্যে কোনওদিন আগে জমা পড়েনি। পঞ্চায়েতের সময় রাজ্যে আগেও দুর্ভাগ্যবশত মৃত্যু হয়েছে। আসলে বাড়ির মধ্যে কে দাঁড়াবে তাই নিয়ে বিরোধ চরমে পৌঁছে যায়। চোপড়ায় যা হয়েছে, তাতেও তেমনটাই হয়েছে, তৃণমূল কোনওভাবেই জড়িত নয়। আর ভাঙড়ে ওখানকার বিরোধী দল যারা শেষ ভোটে জিতেছে তারা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে।'


বিরোধীদের নিশানা শানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'উত্তরপ্রদেশে, ত্রিপুরায় তো ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে মনোনয়নই জমা দিতে দেওয়া হয় না। পকসো কেসেও অ্যারেস্ট হয় না। এখানে বিধানসভা ভোটের পরে নির্বাচন কমিশনের অধীনে আইনশৃঙ্খলা থাকার সময়ও যে মৃত্যু হয়েছে তাঁর জন্যও আমাদের ছেলেদের অ্যারেস্ট করেছে। ১৫৫টা সেন্ট্রাল টিম পাঠানো হয়েছে। কোথাও মারছে, কোথাও কাটছে। কোর্টে গিয়েও খুন করে দিয়ে আসছে। দানবের রাজত্ব চলছে। কিন্তু সেখানে নক্কারজনক কয়েকটা রাজনৈতিক দল, যাদের নাম বলতে আমার ঘৃণা হয়। যারা মানুষকে খুন করত। নন্দীগ্রামে এখনও খুঁজলে হয়তো মৃতদেহ পাওয়া যাবে। হাত কাটত, পা কাটত, মুন্ডু কাটত, কাউকে নমিনেশন ফাইল করতে দেওয়া হত না। ১০০-এ ১০০ ভোট পেত, আর আজ তারা গলা উঁচিয়ে বড় বড় কথা বলছে।'


পাশাপাশি বিরোধীদের তৃণমূল সুপ্রিমোর হুঁশিয়ারি, 'ওরা নাকি প্রতিরোধ করবে। হ্যাঁ, নিজেদের কথা প্রতিরোধ করুন। শুভ শক্তির উদয় হোক। নাহলে জানবেন এক হাতে তালি বাজে না।'


আরও পড়ুন- মনোনয়ন শেষ, অব্যাহত হিংসা, ভাঙড়ে শুধুই দর্শক পুলিশ ! মিডিয়াকে লক্ষ্য করে বোমা, গুলি


মনোনয়ন মানেই যেন অশান্তি। বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election 2023) আগে চোখে পড়েছে এই ছবি। মনোনয়নের প্রথম দিন মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে খুন হয়েছিলেন কংগ্রেস কর্মী। দ্বিতীয় দিন মুর্শিদাবাদেরই ডোমকলে অস্ত্র নিয়ে বিডিও অফিস পাহারা দিতে দেখা গিয়েছিল শাসক নেতাকে। তৃতীয় দিনের মনোনয়নে দেখা গিয়েছিল রক্তপাত। মনোনয়নের চতুর্থ দিনে ভাঙড় থেকে ক্যানিং, গুলি-বোমাবাজি দেখেছে বাংলা। মনোনয়নের পঞ্চম দিন, জেলায় জেলায় বোমাবাজি, সংঘর্ষ দেখেছে বাংলা। শেষ দিনেও উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ, বাংলা ভাসল রক্তের স্ত্রোতে।